ফেনীর মহিপালে ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে আহত কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম (২৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার বিকাল ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দুই দফা জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি চরচান্দিয়া ইউনিয়নে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।  

নিহতের বড় ভাই মাহফুজুল হাসান জানান, চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন মাসুম। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ।  গত রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের ছাত্রজনতার মিছিলে জাতীয় পতাকা বুকে জড়িয়ে অংশ নেন মাসুম। দুপুর ১টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মাসুম। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসাতালে ভর্তি করেন। সেখানে থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। 

ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার রাতে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। আত্মীয়স্বজনরা হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। সকাল ৯টায় সোনাগাজী মোহাম্মদ ছাবের সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে তার প্রথম জানাজা হয়। দ্বিতীয় জানাজা চরচান্দিয়া ছোবহানিয়া মসজিদের সামনে শেষ করে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।  

উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যম চরচান্দিয়া গ্রামের মৃত হাফেজ নোমান হাসানের ছেলে মাসুম। ছোটবেলা থেকে মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। 

সোনাগাজী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৪ সালে দাখিল, চট্টগ্রাম আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ২০১৬ সালে আলিম পাশ করেন। ছাগলনাইয়া আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতক পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হন। স্থানীয়ভাবে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। এমন একজন মেধাবী ছাত্র ও বিশ্বস্ত একজন কর্মী হারিয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতারাও হয়ে পড়েছেন হতবিহবল। শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে জেলা ও উপজেলা নেতারা ছুটে যান মাসুমের বাড়িতে। কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলে শরিক হন তারা।