কারারক্ষীদের ওপর হামলা করে পালিয়েছে ২৫ কয়েদি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের কারারক্ষীদের ওপর হামলা করে গেট ভেঙে পালিয়ে গেছে বেশ কিছু কারাবন্দি।
বুধবার বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি চালিয়েছে কারারক্ষীরা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী জেলা কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন। তবে কতজন পালিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ তার সঠিক তথ্য না বলতে পারলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে আনুমানিক ২০ জন করাবন্দি পালিয়েছে।
এদের মধ্যে আলোচিত মিলন হোসেনকে ১০ টুকরো করে হত্যা মামলায় মূল হোতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজীব শেখ রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেল সুপার আব্দুল বারেক।
তিনি জানান, কারাগারের ভেতরে দুপুরের খাবার ও গণনা শেষ করে অফিসেই নামাজ আদায় করছিলাম। নামাজ শেষ করে উঠতেই হঠাৎ কারাগারের ভেতর থেকে চিৎকার ও অভ্যন্তরীণ গেটে আঘাতের শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে গিয়ে দেখি অন্তত ৩শ জন সংঘবদ্ধ হয়ে ভেতর থেকে একসাথে গেটে ধাক্কা দিচ্ছে। এতে গেটের হেজবোল্ড ভেঙে যায়।
এ সময় কারাবন্দিরা পালানোর চেষ্টা করলে কারারক্ষীরা ফাঁকাগুলি চালায়। এ সময় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আবারো ভেতরে ঢুকে যায়। এ সুযোগে ২০ থেকে ২৫ জন কারাবন্দি পালিয়ে যায়।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঠেকাতে গিয়ে ৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন। এছাড়া কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অস্ত্রভাণ্ডার রক্ষিত আছে, কারাবন্দিরা নিরাপদে আছেন।
সুত্র জানায়, কারাগারের ভেতরে থাকা কুষ্টিয়ার চাঞ্চল্যকর দশ টুকরা হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কিশোর গ্যাং এস কে সজীবের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে। কারাগার থেকে পলাতক সজীব শেখ (২৪) কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। সে কুষ্টিয়া শহরের কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান ছিল। সে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুল আলম শিকদার বলেন, কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কয়েকটি টিম কারাগারে যাই। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কতজন পালিয়েছে সেটা জানা যায়নি। কারাগারে কর্মরত সবাইকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
জেল সুপার আব্দুল বারেক আরও জানান, বন্দিদের তালিকা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তালিকা মেলানোর পর জানা যাবে কতজন বন্দি পালিয়েছেন। পাশাপাশি পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের পরিচয় জানা যাবে। কারাগার সুত্র জানায়, ৬শ ধারণক্ষমতা থাকলেও প্রায় ৯ শতাধিক বন্দি রয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে।