Logo
Logo
×

সারাদেশ

বগুড়ায় থানায় হামলা, আ.লীগ কার্যালয়ে আগুন 

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম

বগুড়ায় থানায় হামলা, আ.লীগ কার্যালয়ে আগুন 

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার খবরে লাখো জনতা মিছিল নিয়ে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় আসেন। সেখানে মিষ্টিমুখ ও বিজয় উল্লাস শেষে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও নেতাকর্মীদের বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করেন। 

শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে সদর থানায় ককটেল হামলার পর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। শহরের বড়গোলা এলাকায় ভূমি অফিসে আবারও আগুন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহর, শহরতলি ও বিভিন্ন উপজেলা এলাকায় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। হামলা চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়ে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেষ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা শহরে নবাববাড়ি সড়কে সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। পাশেই পুলিশ প্লাজার ভাঙচুরের পর বিভিন্ন দোকানে লুটপাট করা হয়।

টেম্পল রোডে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু জানান, দুর্বৃত্তরা তার সদরের গোকুল এলাকায় বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও আসবাবপত্রে আগুন দেয়। তারা পাশে জেলা যুবলীগের সদস্য শফিকুল ইসলাম আপেল ও যুবলীগ কর্মী মেহবুব হোসেন মিতুর বাড়িতে ভাংচুরের পর আগুন দেয়। 

বাঘোপাড়া খেলার ঘর এলাকায় যুবলীগ কর্মী আবদুল আলিমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট করে। শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক আবদুল আলিমের বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানের বাড়িতে হামিলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সদর উপজেলা পরিষদের হামলা, ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয়।

শহরের কানুচগাড়ি এলাকায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলামের তিনতলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলনের ক্রীড়া সংস্থার অফিসের মালামাল বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় রেজ্জাকুল হায়দার টাওয়ারে হামলা করা হয়। সেখানে নিচতলায় এক যুবলীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।

বিক্ষুব্ধরা শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান ববির বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। নিচতলায় থাকায় একটি জিপগাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সন্ধ্যার আগে শহরের টেম্পল রোডে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আবার আগুন দেওয়া হয়।

বগুড়া সদর থানার সেকেন্ড অফিসার আবদুর রহিম বলেন, বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বিজয় মিছিল থেকে শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে সদর থানা লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। 

এরপর কয়েক দফা সদর থানায় হামলার পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে পুলিশ ফাঁড়ি ও সদর থানার আগুন নিভিয়ে ফেলে। থানা রক্ষায় পুলিশ হামলাকারীদের দিকে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। 

অন্যদিক শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে লাখো জনতা কারফিউ উপেক্ষা করে শহরের সাতমাথার দিকে আসে। সেখানে তার বিজয়োল্লাস ও মিস্টি বিতরণ করেন। সেনা সদস্যদের গাড়ি দেখে তারা স্যালুট দিয়ে ও হাত নেড়ে ধন্যবাদ জানান। এর আগে সেনা সদস্যরা বগুড়া রেলস্টেশনে আটকেপড়া পুলিশ ফাঁড়ির সশস্ত্র সদস্যদের উদ্ধার করে পুলিশ লাইন্সে পৌঁছে দেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম