Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুষ্টিয়ায় আ.লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর আগুন, আহত অর্ধশত

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৬ পিএম

কুষ্টিয়ায় আ.লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর আগুন, আহত অর্ধশত

আন্দোলনকারীদের ব্যানারে হাজার হাজার মানুষ কুষ্টিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ট্রাফিক পুলিশ অফিস, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, জেলা পরিষদ ভবনসহ বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। 

এ সময় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ব্যক্তিগত অফিসও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হয়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলে। তবে সারাদিন শহরে আন্দোলনকারীদের দখলে থাকলেও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীকে রাস্তায় দেখা যায়নি। 

এসব ঘটনায় তিনজন সংবাদকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া পুলিশ আন্দোলনকারী ও পথচারীসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কার্যত কুষ্টিয়া শহর আন্দোলনকারীদের দখলে ছিল। পরে ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা সাড়ে ১০টার পর থেকে শহরের মজমপুর বাস ডিপো মসজিদের সামনে জড়ো হতে শুরু করে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এ সময় রাস্তার দুপাশ থেকে শত শত মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলে যোগ দেন। এ সময় ওই মিছিলে শিক্ষার্থীদের বড় বড় কয়েকটি মিছিল যোগ দিলে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক।

পরে চৌড়হাস মোড়ে গিয়ে তারা মহাসড়কের ওপর অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের অবস্থান থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের একটি বহরের ওপর হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। সেখানে ৬-৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তারা আবার মিছিল নিয়ে মজমপুর গেটের দিকে রওনা হয়। মিছিলটি ফুলতলা মোড়ে অতিক্রম করার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে পুলিশ সে সময় কোনো অ্যাকশনে যায়নি।

পরে রাইফেল ক্লাবের পাশে ছাত্রলীগ কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এরপর সাদ্দাম বাজার মোড়ে এসে আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাঞ্জারুল ইসলাম চঞ্চলের ব্যক্তিগত অফিস এবং সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশার ব্যক্তিগত অফিসের হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর এবং আগুন দেয়। 

এরপর মিছিলকারীরা একে একে মজমপুর গেটে জেলা ট্রাফিক পুলিশের আগুন দেয়, ভাঙচুর চালায় পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর মুরালে। পরে বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অফিসে ব্যাপক ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এছাড়া তারা কুষ্টিয়া মডেল থানা ও জেলা পরিষদের নবনির্মিত ভবনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেন। 

হামলার সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ করছিলেন। তবে আন্দোলনকারীদের হামলার মুখে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যান। এছাড়া বড়বাজার রেলগেটের কাছে পুলিশ বক্স জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এছাড়া আন্দোলনকারীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। 

বেলা ২টার পর আন্দোলনকারীরা পুনরায় শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু এসময় পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় চ্যানেল ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার শরীফ বিশ্বাস, ক্যামেরাপার্সন এসআই সুমন এবং একাত্তর টেলিভিশনের প্রতিনিধি শাহিন আলী ছররা গুলিতে আহত হন। এছাড়া পুলিশ ও আন্দোলনকারীসহ অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছিল। এতে পুরো শহরের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। 

কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। এমনকি পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের পরও তারা নিশ্চুপ ছিল। তবে আন্দোলনকারীরা শহরের পুলিশের স্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাংচুর ও আগুন দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম