গাইবান্ধার সাঘাটায় বন্যায় কৃষিতে ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাঠের পর মাঠ খালি পড়ে আছে। এসব খেতের ফসল বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারিভাবে পুনর্বাসন করা হলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে আশা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।

সাঘাটা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুই দফা বন্যায় ৫৩৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে আউশ ২৩৬ হেক্টর, শাকসবজি ৮০ হেক্টর, পাট ১৮১ হেক্টর, ভুট্টা ১৩ হেক্টর ও বীজতলা ২৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। এতে উপজেলায় অন্তত ৯ হাজার কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পাট আর ভুট্টা চাষ করে প্রতিবারই লাভের মুখ দেখেন কৃষকরা।

বিগত দিনের মতো এবারও লাভের আশা ছিল তাদের। তাই প্রায় সব জমিতে পাট বুনেছিলেন তারা। মাঠে পাটগাছ কেবল একবুক ও মাথা সমান হয়েছে, কোন কোনো খেতের পাটগাছ পরিপক্ব হয়েছে মাত্র, আর কয়েকটা দিন পরেই কেটে জাগ (পঁচানো) দেওয়ার কথা। এমন সময় আসে বন্যা। সেই বন্যার পানির নিচে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে সমস্ত পাটগাছ।

জানা যায়, যমুনা তীরবর্তী ও নদীবেষ্টিত উপজেলার চরাঞ্চল কাঠুর, নলছিয়া, গুয়াবাড়ী, পাতিলবাড়ী, গাড়ামাড়া, হলদিয়া, হাটবাড়ী, সাথালিয়া, গোবিন্দী, গোবিন্দপুর, বাঁশহাটা, বুগারপটল, হাসিলকান্দি, চিনিরপটল, খামারপবনতাইড়, দীঘলকান্দি এলাকায় পাট, ভুট্টা, আউশ, তিল ও শাকসবজির আবাদ বেশি করা হয়। 

প্রতি বছর বন্যার আগেই ফসল ঘরে তোলেন কৃষকরা; কিন্তু এবার বন্যা একটু আগেই আসায় তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায় কৃষকের উঠতি ফসল। 

ক্ষতিগ্রস্ত পাটখেতে গেলে এলাকার কৃষকরা জানান, পাট আবাদের পাশাপাশি করলা, মরিচ, লাউ, পটোল, তিল, কুমড়া, শশাসহ বিভিন্ন সবজির আবাদও নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমাদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এবারের বন্যায় ।
সরকার কৃষি প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করলে ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান জানান, সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতার ব্যাপারে এখনো কোনো বরাদ্দ আসেনি। তবে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।