মসজিদ থেকে ফেরার পথে গুলিতে নিহত আমির, ৩ সন্তান নিয়ে বিপাকে স্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৬ পিএম
জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে ফেরার পথে অটোরিকশাচালক আমির তালুকদার পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার নিহতের ঘটনায় তিন সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী মোসা. আন্নি আক্তার। কর্মক্ষম স্বামীকে হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সহায়তার দাবি করেছেন স্বামীহারা আন্নি আক্তার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার আর কিছুই রইল না। স্বামী পুলিশের গুলিতে মারা না গিয়ে আমি মারা গেলে অনেক ভালো হতো। এখন আমার তিন সন্তানকে কে ভরণপোষণ দেবে? আমি কিভাবে তিন সন্তানকে লালন পালন করব তা ভেবে পাচ্ছি না? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সন্তানদের ভরণপোষণ ও লালন পালনের জন্য আর্থিক সহায়তার দাবি জানাই।
জানা গেছে, তালতলী উপজেলার মৌপাড়া গ্রামের মৃত্যু আলতাফ তালুকদারের ছেলে আমির হোসেন তালুকদার ছোটবেলায় কাজের সন্ধানে ঢাকায় যান। ২০১৬ সালে মুন্সীগঞ্জের মেয়ে মোসা. আন্নি আক্তারকে বিয়ে করেন আমির। ঢাকার রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার আরমান (৬), আরিয়ান (৪) ও আমেনা (১) নামের তিনটি সন্তান রয়েছে।
গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজ আদায় করতে রামপুরা মোল্লা টাওয়ার সংলগ্ন মসজিদে যান। নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরছিলেন আমির তালুকদার। ওই সময় কোটা আন্দোলনকারী ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা চলছিল। পুলিশের তিনটি গুলি এসে তার শরীরে বৃদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ি তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের মৌপাড়া গ্রামে নিয়ে আসেন। বাবার কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা ঢাকায় নিহত আমির হোসেন তালুকদারের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের চাচা জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, গত ১৯ জুলাই ঢাকায় আন্দোলন চলাকালে আমার ভাতিজা আমির হোসেন তালুকদার পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমির হোসেন স্ত্রী ও তিনটি শিশু সন্তান রেখে গেছেন। ওই শিশু সন্তানদের ভরণপোষণের কেউ রইল না। আমির হোসেনের স্ত্রী আন্নি আক্তার তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তালতলী থানার ওসি মো. শহীদুল ইসলাম খান বলেন, নিহত আমির হোসেন তালুকদারের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা জেনেছি। তার নিহতের ঘটনাস্থল ঢাকায়। ওই স্থানের পুলিশই ব্যবস্থা নেবেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, নিহত আমির হোসেনের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।