চট্টগ্রামে বিক্ষোভের চেষ্টা শিক্ষার্থীদের, পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের বাধায় ছত্রভঙ্গ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১০:১০ পিএম
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হাতাহাতি ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার বিকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড় ও জামালখান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ ৮-১০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১৬ জনকে আটক করেছে।
আহতরা হলেন- কোতোয়ালি থানার সাব-ইন্সপেক্টর মোশাররফ হোসেন ও নিউজ টোয়েন্টি ফোরের ক্যামেরাপার্সন জাবেদ। তবে আহত শিক্ষার্থীদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম ওবায়দুল হক যুগান্তরকে বলেন, কারফিউ চলাকালীন কোনো ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি বা সভা-সমাবেশ করার সুযোগ নেই; কিন্তু কর্মসূচির নামে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছু অনুপ্রবেশকারী বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছিল। পুলিশ তাদের সরে যেতে বললে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাদের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে চট্টগ্রামের সমন্বয়ক পরিচয়ে খান তালাত মাহমুদ রাফি ও মাহি নামের দুই শিক্ষার্থী রোববার রাতে ভিডিও বার্তা প্রদান করেন। এতে তারা ঢাকায় ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের আন্দোলন প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিবৃতি জোর করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করে সারা দেশে মঙ্গলবার যে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে যোগ দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চেরাগী পাহাড় মোড়ে বেশ কিছু নারী শিক্ষার্থীসহ কয়েকশ শিক্ষার্থী জড়ো হন। তারা সড়কে বসে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেখানকার স্থানীয় কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, শ্রমিক লীগ নেতা জিকুসহ সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেন। ব্যানার টেনেহিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলেন।
এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে আটক করে গাড়িতে তুলে নিলে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বিক্ষোভ দমাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পালটা ধাওয়া শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। সহপাঠীদের ছাড়িয়ে নিতে কেউ কেউ পুলিশের প্রিজনভ্যানের সামনে শুয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এ সংঘর্ষে এক পুলিশ, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৬ জনকে আটক করে।