Logo
Logo
×

সারাদেশ

১৪ মামলায় গ্রেফতার ১৫১

পাবনায় বিএনপি-জামায়াতের অধিকাংশ নেতাকর্মী ঘরছাড়া

Icon

আখতারুজ্জামান আখতার, পাবনা

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০২:০০ এএম

পাবনায় বিএনপি-জামায়াতের অধিকাংশ নেতাকর্মী ঘরছাড়া

ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনায় পাবনায় ১৪ মামলায় এ পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াতের ১৫১ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। ১৬ জুলাই থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত এসব নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা। 

এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে পাবনার বিএনপি ও জামায়াতের অধিকাংশ নেতা এখন আত্মগোপনে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, পুলিশের গ্রেফতার অভিযান এবং গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে যাওয়ায় জেলায় বিএনপি ও জামায়াতের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ভেঙে পড়েছে।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে পাবনা শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় সহিংসতা শুরু হলে পাবনাতেও ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিরোধী রাজনৈতিক মহল যোগ দিলে সহিংস ঘটনার সূত্রপাত হয়। পুলিশের ওপর হামলা এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগহ বেশ কয়েকটি স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটে। 

পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী জানান, এসব সহিংস ঘটনায় ১৬ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ১৪টি মামলা করে পুলিশ। মামলায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল হক বাবু, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর গফুর ও জামায়াত নেতা দৌলত মেম্বরসহ ১৫১ নেতাকর্মী গ্রেফতার হন। পাবনা জেলা বিএনপির অভিভাবক দলের চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

এছাড়া পাবনা র‌্যাবের অভিযানে জামায়াত-শিবিরের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সহিংস ঘটনার ভিডিও দেখে জড়িতদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান। 

র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, ২৪ ঘণ্টায় র‌্যাবের অভিযানে সদর উপজেলার হেমায়েতপুর থেকে ০৪ নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি জয়নাল আবেদিন (২৭), ইউনিয়ন ছাত্র শিবির সভাপতি ইমাম হোসেন (৩৪), জামায়াত কর্মী সজিব হোসেনকে (২৪) গ্রেফতার করা হয়েছে। 

গ্রেফতার আতঙ্কে পাবনার বিএনপি ও জামায়াতের অধিকাংশ নেতা এখন বাড়িছাড়া। এসব কারণে দলটি এখন নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে। আত্মগোপনে থেকে জেলা বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা যুগান্তরকে জানান, দলের কতজন মামলার আসামি তা তারা জানেন না। তবে ধরা পড়লেই মামলার আসামি করা হচ্ছে-এমন ভয় কাজ করছে। 

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, কোনো সহিংস ঘটনায় জড়িত না থাকলেও ভবিষ্যতে যাতে কোনো আন্দোলন করতে না পারে সেজন্য অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এজন্য রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে আত্মগোপনে যাওয়া ছাড়া তাদের কোনো রাস্তা নেই। 

এদিকে বিএনপির মতো জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের কাউকেই এখন দেখা যাচ্ছে না। পাবনা-৫ (সদর) এবং পাবনা-১ (বেড়া-সাঁথিয়া) ছিল জামায়াতের ঘাঁটি। জামায়াতে ইসলামির আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড এবং আরেক প্রভাবশালী নেতা মাওলানা আব্দুস সুবহানের কারাগারে মৃত্যুর পর থেকে দলটি প্রায় এক দশক রাজনীতির মাঠে একেবারেই নীরব ছিল। 

এ সময়ে এই দলটির নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। তবে প্রকাশ্য তারা গোপনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির মতো জামায়াতও ব্যাপক চাপে পড়ে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াত সমর্থিত একাধিক সূত্র জানায়, তাদের অসংখ্য কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম