Logo
Logo
×

সারাদেশ

গুলিতে নিহত কিশোর হোসেনের মা-বাবার আহাজারি থামছে না 

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৬ এএম

গুলিতে নিহত কিশোর হোসেনের মা-বাবার আহাজারি থামছে না 

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত চকলেট বিক্রেতা হোসেন মিয়ার পরিবারে থামছে না আহাজারি। ঘটনার এক সপ্তাহ পার হলেও কুমিল্লার দেবিদ্বারে নিজ বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। 

হোসেন মিয়া (১০) উপজেলার বেতরা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। এর আগে ২০ জুলাই চিটাগাং রোড এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় কিশোর হোসেন মিয়া। এদিন রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে গিয়ে স্বজনরা তার লাশ শনাক্ত করেন। 

মানিক মিয়া জানান, ২০ জুলাই প্রতিদিনের মতো হোসেন মিয়া চিটাগাং রোড এলাকায় পপকর্ন, আইসক্রিম ও চকলেট বিক্রি করতে যায়। দুপুরে পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মাঝে সংঘর্ষ বাধে। এতে পুলিশ নাশকতাকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় একটি গুলি হোসেন মিয়ার পেটের সামনে দিয়ে ঢুকে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। কে বা কারা তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায় সেটা জানতে পারিনি। রাত ১২টায় মর্গে গিয়ে আমি ছেলের লাশ শনাক্ত করি। 

তিনি বলেন, আমার ছেলে তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। দুমুঠো ভাতের জন্য আমরা জীবন সংগ্রামে লিপ্ত। আমার ছেলে পপকর্ন, আইসক্রিম ও চকলেট বিক্রি করে। তাকে কেন জীবন দিতে হলো? 
শনিবার তাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, হোসেনের মা মালেকা বেগমের চিৎকারে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। মোবাইল ফোনে ছেলের ছবি দেখে বাবা-মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

বাবা মানিক মিয়া আরও বলেন, তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বরশল গ্রামে। সেখানে তার স্বজন বলতে কেউ নেই। বিয়ের পর থেকে তিনি দেবিদ্বারের শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। বছর পাঁচেক আগে ঢাকায় যান। চিটাগাং রোড মুক্তিনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। ঢাকায় সারাদিন ফেরি করেন। চিপস, চকলেট, আইসক্রিম বিক্রি করেন। ১০ বছরের হোসেন তার বড় ছেলে। সেও ফেরি করত। মানিক-মালেকা দম্পতির মাহিনুর আক্তার (৮) ও শাহিনুর আক্তার (৬) নামে আরও দুটি মেয়ে আছে।

মানিক মিয়া বলেন, হাসপাতালে ছেলের লাশ দেখার পর আমার আর বেঁচে থাকার ইচ্ছা হচ্ছে না। আমার এইটুকু একটা ছেলে। তার শরীরে দুইটা গুলি লেগেছে। একটা গুলি তার তলপেট দিয়ে ঢুকে আরেক দিক দিয়ে বের হয়েছে। আরেকটা তার কোমরে ঢুকেছে। 

এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, যেহেতু ঘটনাস্থল আমার এলাকায় নয়, তাই বিষয়টি আমার নলেজে নেই। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়েছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করব। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম