Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘ওরা আমার স্বামীকে শুধু শুধু গুলি করছে’

Icon

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০২ এএম

‘ওরা আমার স্বামীকে শুধু শুধু গুলি করছে’

ওরা আমার স্বামীকে শুধু শুধু গুলি করছে। তিনি কোনো আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না। তিনি তো ড্রাইভার। তার মৃত্যুতে সন্তানদের নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। পরিবারে উপার্জনের মানুষ না থাকায় ছেলেময়ের দেখাশোনার কেউ রইল না। সংসার চালানোর মতো কেউ রইল না। মেয়েটি বারবার বাবা বাবা বলে কান্না করছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নিহত কামাল হোসেন সবুজের (৩৮) স্ত্রী সাদিয়া বেগম রানু। 

কামাল কোটা আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই সকালে ঢাকার বাড্ডার শাহজাদপুরে গুলিতে নিহত হন। তার বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের বালকদিয়া গ্রামে। তিনি মুনসুর হাওলাদারের ছেলে। তার দুই ছেলে ও তিন এক মেয়ে রয়েছে।

সাদিয়া বেগম আরও বলেন, ছেলেমেয়ে নিয়ে ঝালকাঠি শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম। এখন আমাদের থাকার জায়গা নেই। আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই যাতে ছেলেমেয়ে নিয়ে বেঁচে থাকতে পারি।

কামালের বড় ছেলে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সামিউল ইসলাম (১৩) বলে, বাবার আয়ে আমাদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসার চলত। এখন বাবা নেই, আমাদের খরচ চালাবে কে? আমরা অসহায় হয়ে গেলাম। 

জানা যায়, ২০ জুলাই সকালে বাড্ডার শাহজাদপুরের ভাড়া বাসা থেকে নাশতা খেতে বের হয়েছিলেন কামাল। এ সময় হঠাৎ তার মাথায় গুলি লাগলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তিনি বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইয়ের গাড়িচালক ছিলেন। ২২ জুলাই সকালে তার শ্বশুরবাড়ি ঝালকাঠি সদরের আগরবাড়ি এলাকায় তাকে দাফন করা হয়। 

সাদিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী বলে গেছেন-তিনি মারা গেলে তাকে যেন তার জন্মস্থান বিনয়কাঠিতে মাটি না দিয়ে আমাদের কাছাকাছি কোথাও দেওয়া হয়। তাই তাকে আমার বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে আগরবাড়ি গিয়ে দেখা যায়, কামালের অবুঝ ছোট ছেলেটা বাবার চ্যানেল আইয়ের পরিচয়পত্রটি গলায় ঝুলিয়ে মায়ের পাশে বসে আছে। শিশুটি বারবার বলছে বাবা ফিরে আসবে। শিশুটির অপর দুই ভাইবোন পাশে বসে কান্না করছে। 

কামালের স্ত্রীর ভাই রিপন হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে ঢাকায় গিয়ে বাড়িতে লাশ নিয়ে আসি। আমার বোনটি বিধবা হয়ে গেল। ওদের আহাজারি দেখে কান্না ধরে রাখতে পারছি না। ২০ জুলাই রাত সাড়ে ৭টায় ঢাকার বাড্ডা থেকে কামালের লাশ নিয়ে আসা হয়। ২১ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টায় জানাজা শেষে পশ্চিম আগড়বাড়ি জুম্মা কোবা মসজিদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম