ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে লাশ হলেন দাগনভূঞার শিবলু
দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৫১ পিএম
উত্তরার আব্দুল্লাহপুরে আট বছরের ছেলে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে লাশ হয়ে অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন দাগনভূঞার আবু বকর ছিদ্দিক শিবলু। আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন অজ্ঞান থাকার পর বুধবার তিনি মারা গেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে সময় রোববার আবদুল্লাহপুর রেলগেট এলাকায় শিবলু গুলিবিদ্ধ হন। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে শিবলুর মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার বিকালে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেরেন বড় ভাই আবদুল হাকিম বাবলু, স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার রিমাসহ স্বজনরা। ওই রাতেই উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁনপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
শুক্রবার বিকালে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, শিবলু দক্ষিণ চাঁনপুর এলাকার ওছি উদ্দিন ভ‚ঞা বাড়ির মৃত আবুল হাসেমের ছোট ছেলে। তার বড় ভাই বাবলু ইয়াকুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার ৫ বোন বিবাহিত। ঢাকায় এলিট পেইন্টের সহকারী হিসাবরক্ষক পদে কর্মরত থাকার সুবাদে প্রায় চার বছর ধরে তিনি উত্তরা ৮নং সেক্টরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাসবাস করতেন। দুই সন্তানের একজন ফারহান ছিদ্দিক (৮ বছর) ও নুসাইবা ছিদ্দিক (১০ মাস)।
শিবলুর বড়ভাই বাবলু যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার দিন গত ২১ জুলাই রোববার বিকালে ছেলে ফারহানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় শিবলু। আবদুল্লাহপুর রেলগেটে হাঁটাহাঁটির পর ছেলেকে নিয়ে তিনি বসে ছিলেন। তখন গোলযোগ শুরু হলে বাসায় যেতে ছেলেকে নিয়ে উঠে দাঁড়াতেই শিবলু মাথার বামপাশে গুলিবিদ্ধ হন। আশপাশের লোকজন তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠান।
বাবলু বলেন, রিমার কাছ থেকে খবর পেয়ে ঢাকায় ছুটে যাই। ভাইকে বাঁচাতে নিজের শরীর থেকে চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শিবলুর আর জ্ঞান ফেরেনি। এ কারণে তার কাছ থেকে কোনো কিছুই জানতে পারিনি।’
ওইদিন পূর্ব উত্তরা থানায় সংঘর্ষ হলেও অপরপ্রান্তে দক্ষিণখান থানা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শিবলু। উভয় থানায় শরণাপন্ন হয়েও কেউ মামলা নেয়নি। ফলে পোস্টমর্টেম ছাড়াই গুলিবিদ্ধ একমাত্র ভাইকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে হয়।