Logo
Logo
×

সারাদেশ

বন্ধুদের সঙ্গে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বালিয়াকান্দির সাগর

Icon

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৪২ পিএম

বন্ধুদের সঙ্গে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বালিয়াকান্দির সাগর

কোটা আন্দোলনে গিয়ে ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. সাগর হোসেন (২১)। তার বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। 

বাবা অঝোরে কাঁদছেন আর বিলাপ করে বলছেন, ছেলেটা উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মিরপুর গোলচত্বরে সংঘটিত সংঘর্ষে মারা যায় সাগর। সে মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।

নিহত সাগরের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের টাকাপোড়া গ্রামে। তার বাবা পেশায় কৃষক। পরিবারে দুই ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল বড়। ছোট বোন নারুয়া লিয়াকত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। 

পারিবারিক সূত্র জানায়, সাগর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন নারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর নারুয়া লিয়াকত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরে রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজধানী ঢাকায় চলে যান। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের অভাব দূর করতে তিনি স্বল্পকালীন একটা চাকরি শুরু করেন। সেখানেই চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে বসবাস করতেন।

চাচাতো ভাই সাইফুল হোসেন জানান, সাগর ও তিনি একসঙ্গেই ঢাকায় থাকতেন। অনেক নিষেধ করার পরও ১৯ জুলাই সকালে বন্ধুদের সঙ্গে মিরপুর-১০ নম্বরে  কোটা আন্দোলনে সে যায়। কয়েকবার তার মোবাইল ফোনে কল করেও কোনো সাড়া পাইনি। এক ঘণ্টা পর ফিরতি একটা ফোন কলে জানানো হয় সাগরের মাথায় গুলি লেগেছে। বর্তমানে সে মিরপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। খবর পেয়ে তখন সেখানে গিয়ে জানতে পারি সাগর মারা গেছে। এরপর তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসি। ওইদিন বিকালে বালিয়াকান্দির নারুয়ার টাকাপোড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়। 

নিহতের বাবা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমার ছেলে ছয় বছর ধরে লেখাপড়ার জন্য বাড়ি ছাড়া হয়ে ঢাকায়। ঈদ কিংবা বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া সে বাড়িতে আসত না। সে কোনো রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিল না। আমি মাঠে কাজ করে খাই। আমিও কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আমার ছেলে সব সময় পরিবারের কথা ভাবত। তার আশা ছিল ছোট বোনকে এইচএসসি পাশ করার পর ঢাকায় নিয়ে কোচিং করাবে। আরও কত স্বপ্ন ছিল তার, অথচ একটি বুলেটে সব শেষ হয়ে গেল।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম