টাঙ্গাইলে আতঙ্কে বাড়িছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা, গ্রেফতার ১৭৯
যুগান্তর প্রতিবেদন, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২২ পিএম
কোটা সংস্কার ইস্যুকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলে শনিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে জেলায় ১৭৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরসহ কয়েকটি ঘটনায় টাঙ্গাইলে চার থানায় ১১টি মামলা করা হয়েছে। পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক নেতা বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, মধুপুর ও ধনবাড়ী থানায় এসব মামলা করেন। মামলায় ৪২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দুই হাজার ৮৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৮ জুলাই টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এছাড়া শহরের নিরালা মোড় এলাকায় পুলিশ বক্স ও সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর করাসহ পুলিশ ওপর হামলা করে আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় সদর থানার এসআই আরিফ রব্বানী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩০০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।
এছাড়া একইদিন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক খোরশেদ আলম বাদী হয়ে ২০ জুলাই অজ্ঞাত ২০০ ব্যক্তিকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হাসান বাদী ৯২ নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০ জনের নামে মামলা করেন।
২৬ জুলাই টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাদি হয়ে ৩৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০ জনের নামে মামলা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনকারী ১৮ জুলাই তার অস্থায়ী কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন।
১৯ জুলাই দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগে শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আশরাফউল্লাহ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫০ ব্যক্তিকে আসামি করে কালিহাতী থানায় ২১ জুলাই মামলা করেন।
এছাড়া সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কালিহাতী থানার এসআই ইমাম হোসেন বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ২০০ জনের নামে ১৯ জুলাই মামলা করেন। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এসআই মো. ফরহাদ হোসেন বাদি হয়ে ৭৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০ জনের নামে মধুপুর থানায় মামলা করেন।
দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কেয়ারটেকার জামাল হোসেন বাদী হয়ে ৯৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০০ জনের নামে ২০ জুলাই মধুপুর থানায় মামলা করেন।
একই দিন শ্রমিক অফিস ভাংচুরের অভিযোগে শ্রমিক নেতা মনছের আলী বাদী হয়ে ১০৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০ জনের নামে মামলা করেন।
এছাড়া সরকারি বাধা দেওয়ার ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে ১৯ জুলাই ধনবাড়ী থানায় এসআই জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।
আত্মগোপনে থাকা বিএনপির কয়েক জন নেতাকর্মী জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এই আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি বা সহযোগী কোনো অঙ্গসংগঠনের কেউ জড়িত নয়। তারপরও পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করছে। এতে জেলার বেশিরভাগ নেতাকর্মী বাড়িছাড়া।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামলাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ১৭৯ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।