সেতুর টোল প্রভাবশালীদের পকেটে, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম
গড়াই সেতু
ফরিদপুরের মধুখালীতে গড়াই নদীর ওপর নির্মিত গড়াই সেতুর টোল আদায় করছে প্রভাবশালী মহল। এতে প্রতিদিন সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। ওই অর্থ যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পকেটে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, বিষয়টি তারা জেনেছেন, ওই মহলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে ১৯৯১ সালে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের ভেল্লাকান্দী নামক এলাকায় নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের আড়পাড়া এলাকায় অবস্থিত টোল ঘরে সেতুটির টোল আদায় করা হয়।
৩০ জুন ইজারাদারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ নতুন ইজারাদার নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু যথাসময়ে কোনো ইজারাদার দরপত্র দাখিল না করায় ১ জুলাই থেকে সড়ক জনপথ বিভাগ নিজেরাই যানবাহন থেকে টোল আদায় করছেন।
এদিকে টোল ঘর থেকে কিছুটা দূরে মাগুরা থেকে রাজবাড়ীর আঞ্চলিক সড়কের প্রবেশদ্বার গরিয়াদহ এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল সেতু পার হয়ে ওই পথ দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের কাছ থেকে টোল আদায় করছেন। মাইক্রোবাস ৭৫ টাকা, প্রাইভেটকার ৪০ টাকা, নসিমন-করিমন থেকে ৩০ টাকা ও মোরটসাইকেল থেকে ২০ টাকা আদায় করছেন। টোল দেওয়া যানবাহন চালক। যারা টোল নিচ্ছে তাদের দাবি ইজারাদার থাকতে তারাই টোল আদায় করতেন। সেখানে ৯ জন কর্মরত ছিলেন। ইজারাদার না থাকায় তারা বেকার হয়ে গেছেন, যে টাকা তারা প্রতিদিন উত্তোলন করেন ওই টাকা সবাই ভাগাভাগি করে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনুমোদন ছাড়াই কেন টোল নিচ্ছেন জবাবে তারা বলেন সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই মানবিক কারণে নেওয়া হচ্ছে।
আলমগীর হোসেন, অবৈধ টোল আদায়কারী। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, সেতুর টোল একমাত্র আমরাই নিতে পারব। অন্য কেউ এখান থেকে টোল নিতে পারবেন না। প্রভাশালীরা এটা করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। কাইয়ুম মোল্লা, কার্য সহকারী, সড়ক ও জনপথ বিভাগ। মানবিক দিক বিবেচনা করে ওদের টোল নিতে বলা হয়েছে। সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই এটা করা হচ্ছে। গরিব মানুষ ওদের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে, তাই টোল নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।
এটা আইন সঙ্গত নয়, মানবিকভাবে দেখা হচ্ছে বলে জানালেন আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বদরুজ্জামান বাবু। বিষয়টি জানতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শরিফ হোসেন জানান, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ ১৯৯১ সালে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়াই সেতুটি নির্মাণ করা হয়।