ভান্ডারি রীতিতে বাধা, পুলিশের হস্তক্ষেপে মুসলিম রীতিতেই দাফন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৯ পিএম
নুরুজ্জামান মাইজ ভান্ডারি । ছবি: যুগান্তর
রাজশাহীর বাঘায় ভান্ডারি রীতিতে নুরুজ্জামান মাইজ ভান্ডারিকে দাফন করা নিয়ে ভক্ত ও স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।এ নিয়ে দুপক্ষের তর্কবির্তকের এক পর্যায়ে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশের হস্তক্ষেপে তাকে মুসলিম রীতি অনুযায়ীই দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মনিগ্রাম দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার মনিগ্রামের দক্ষিণ পাড়া গ্রামে পল্লি চিকিৎসক, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের গীতিকার এবং কণ্ঠশিল্পী নূরুজ্জামান মাইজ ভান্ডারি গত বুধবার রাত ২টার দিকে নিজ বাসভবনে স্ট্রোক করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। খবর শুনে হাজারো ভক্ত-অনুসারিরা বাড়িতে ভিড় করতে থাকে। মাইজ ভান্ডারির রীতি অনুযায়ী বাড়ির পাশে কবর খোড়া শুরু করা হয়। কিন্তু সামাজিকভাবে ভান্ডারি রীতিতে দাফনে বাধা দেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয়ে উত্তেজিত হয়ে কিছু চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে বাঘা থানার পুলিশ ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এসে উভয়ের সঙ্গে কথা বলে মুসলিম রীতি অনুযায়ী তাকে দাফন করা হয়।
নুরুজ্জামান মাইজ ভান্ডারি পেশায় একজন পল্লি চিকিৎসক। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে উপজেলার মনিগ্রাম বাজারস্থ ‘বাবা ভান্ডারি সেবা সদন’ নামে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন তিনি। চিকিৎসার পাশাপাশি গীতিকার এবং কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত তিনি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত একজন গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পীও ছিলেন তিনি।
তিনি পল্লি চিকিৎসক হিসেবে বিশেষ অবদান রাখায় ‘মহাত্মা গান্ধী স্বর্ণপদক-২০১৭’ অর্জন করেন। মাইজ ভান্ডারি হিসেবে তার সারাদেশে হাজারো ভক্ত-অনুসারি রয়েছে।
এ বিষয়ে মনিগ্রাম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে মুসলিম শরিয়ত অনুযায়ী তার দাফন করা হয়।
বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, নুরুজ্জামান মাইজ ভান্ডারির দাফন নিয়ে ভক্ত ও সামাজিক লোকজনের মধ্যে দ্বিমত সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সেখানে গিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে মুসলিম শরিয়ত অনুযায়ী দাফনের কথা বলা হয়েছে। তারা সেই অনুযায়ী তাকে দাফন করেন।