Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ফেরত না পেয়ে বন্ধুকে খুন

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৩ পিএম

প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ফেরত না পেয়ে বন্ধুকে খুন

প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও বন্ধুর মোবাইলে জমা রেখে পরে চেয়েও ফেরত না পাওয়ায় বন্ধু মামুনকে ফিল্মি স্টাইলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এক লাখ টাকায় ‘কিলার’ ভাড়া করে হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করা হয়। হত্যার পর রেললাইনের পাশে ফেলে রাখা হয় নিহত মামুনের মরদেহ।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব-১৫ এর কাছে অভিযুক্ত বন্ধু শাহেদ এমনটি উল্লেখ করেছেন বলে দাবি করেছেন র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।

র‌্যাব-১৫ এর ছায়া তদন্তে ওঠে আসা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে নিহত মামুনের ব্যবসায়িক পার্টনার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু মো. শাহেদ হোসেনকে মঙ্গলবার রাতে শহরতলীর লিংক রোড এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে ব্যাটালিয়ন কার‌্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

হত্যার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে গ্রেফতার মো. শাহেদ হোসেন (৩০) ঈদগাঁওয়ের মাছুয়াখালী সিকদারপাড়ার মো. মতিউর রহমানের ছেলে। তবে তিনি কক্সবাজার পৌরসভার ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকায় বাস করতেন।

র‌্যাব জানায়, সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া ঘাটপাড়ার মৃত নবী হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল-মামুন (৩০) একজন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য ব্যবসায়ী। লিংক রোড এলাকায় যৌথভাবে পরিচালিত ভিশন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রয়ের একটি শো-রুম রয়েছে। শো-রুমটি মামুন তার বন্ধু শাহেদ ও শাহেদের ভগিনীপতি জসিম উদ্দিনের শেয়ারের ভিত্তিতে পরিচালনা করে আসছিলেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা সাজ্জাদ জানান, কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ের একটি মেয়ের সঙ্গে ঘাতক শাহেদ হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক চলাকালে তারা দুইজনেই কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও শাহেদের মোবাইলে ধারণ করে রাখে। মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের অবনতি হলে শাহেদের মোবাইলে থাকা তাদের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিওগুলো ডিলিট করতে বলেন প্রেমিকা।

নিজের মোবাইল হতে ডিলিট করার আগে, শাহেদ ছবি ও ভিডিওগুলো বন্ধু মামুনের মোবাইলে সংরক্ষণ করতে প্রেরণ করে। পরে প্রেমিকার সামনে শাহেদ তার মোবাইল থেকে ছবি ও ভিডিওগুলো ডিলিট করে। পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিওগুলো বন্ধু মামুনের কাছ থেকে ফেরত চান শাহেদ কিন্তু এসব ছবি ও ভিডিও শাহেদকে দিতে অস্বীকার করে মামুন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামুনকে হত্যার ছক আঁকে শাহেদ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৬ জুলাই রাত ৮টার দিকে মামুনকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে এক জায়গায় যেতে হবে উল্লেখ করে ভিশন শো-রুম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাহারছড়া বাজারে আসতে বলে। শাহেদের কথায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে মামুন বাহারছড়া বাজারে পৌঁছলে দুজনেই মোটরসাইকেলযোগে ঈদগাঁও কালিরছড়া বাজারের একটু আগে পৌঁছলে শাহেদ বন্ধু মামুনকে মোটরসাইকেল থামাতে বলে।

মোটরসাইকেল থামানোর পরপরই ঈদগাঁওয়ের শীর্ষ ডাকাত মাছুয়াখালীর আলী আহমদ ওরফে চুনতি মৌলভীর ছেলে শাহীন ওরফে লালুর নেতৃত্বে কয়েকজন দুর্বৃত্ত মামুনের মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে শাহেদকে বুঝিয়ে দেয়। এ সময় তাদের এক লাখ টাকা প্রদান করে শাহেদ।

পরে মামুনের মোবাইলটি শাহেদ ভেঙে চুরমার করে পানিতে ফেলে দেয়। শাহেদের নির্দেশে ডাকাত শাহীনের নেতৃত্বে মামুনকে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির‌্যাতনের পর হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে রেখে যায়। আর ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে রামু রশিদনগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের খাদেমেরপাড়া এলাকার রেললাইনের পূর্বপাশ হতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মামুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

র‌্যাব আরও জানায়, এ মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ক্লু-লেস এ হত্যার রহস্য উন্মোচন করে মূল পরিকল্পনাকারী ঘাতক বন্ধু শাহেদ হোসেনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব-১৫।

র‌্যাব কর্মকর্তা সাজ্জাদ জানান, মামুন হত্যার ঘটনায় কক্সবাজারের রামু থানায় তার ভাই মোহাম্মদ পারভেজ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে ৭ জুলাই রাতে এজাহার দেন। রাতেই এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। সেই মামলায় গ্রেফতার শাহেদকে রামু থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

রামু থানার ওসি মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মামুনের ভাইয়ের দায়ের করা এজাহারে সন্দিগ্ধ হিসেবে শাহেদের নাম উল্লেখ ছিল।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম