Logo
Logo
×

সারাদেশ

বন্ধুর গলা কেটে তারই বাইকে বান্ধবিকে নিয়ে ফুর্তি করেন আমান

Icon

আবু বাসার আখন্দ, মাগুরা

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম

বন্ধুর গলা কেটে তারই বাইকে বান্ধবিকে নিয়ে ফুর্তি করেন আমান

ফাইল ছবি

মাগুরা আদর্শ কলেজের শিক্ষার্থী আমান ও তীর্থ। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী তারা। মঙ্গলবার সকালে দুজনেরই পরীক্ষা ছিল। অথচ আগের রাতে তীর্থকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান আমান। শহরের দরিমাগুরা এলাকায় এতিমখানার পেছনে গিয়ে প্যাথেড্রিন ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করার পর সেখানেই বন্ধু তীর্থকে একাই জবাই করে হত্যা করেন আমান। 

সভায় কাঁদলেন এমপি

তারপর বাড়ি ফিরে সকালে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। তবে পরীক্ষার হলে অনুপস্থিত তীর্থ। তখনও তার পরিবার গোটা শহরে খুঁজে ফিরছে তীর্থকে। তারা জানেই না যে, তাদের সন্তানকে আর জীবিত রাখেনি তারই বন্ধু আমান!

শুধু তাই নয়, পরীক্ষা শেষে নির্বিকার আমান বান্ধবিকে নিয়ে তীর্থেরই বাইকে করে বড়বিলা এলাকায় বেশ কিছু সময় ফুর্তি করেন। দুপুরের পর মাগুরা পৌর এলাকার কাশিনাথপুর গ্রামে খালাবাড়িতেও যান তিনি। সেখানে রান্নাঘরে বাইকটি লুকিয়ে রেখে ফিরে আসেন শহরে। অপেক্ষায় ছিলেন সময়-সুযোগ বুঝে বাইকটি বিক্রি করে নেশা করবেন। 

পুলিশের হাতে আটকের পর এভাবেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তীর্থ রুদ্রর হত্যাকারী বন্ধু তায়হান ইসলাম আমান। তিনি মাগুরা শহরের ঋষি পাড়ার জিয়াউর রহমান জিবলুর ছেলে।

গত ১ জুলাই রাতে মাগুরা শহরের মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত দরিমাগুরা দোয়ারপাড় এলাকায় আল আমিন ইনস্টিটিউট এতিমখানার পেছনে খুন হন মাগুরা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নিমাই রুদ্রর ছেলে তীর্থ রুদ্র। 

পরদিন সকালে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ক্ষতবিক্ষত লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ । 

এ ঘটনার পর তীর্থর পরিবার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলেও সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো আসামির নাম উল্লেখ ছিল না। তারপরও মাগুরা সদর থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে আমানকে গ্রেফতার করে। পরে সন্ধ্যায় তাকে সঙ্গে নিয়ে খালাবাড়ি থেকে বাইক এবং নিজ বাড়ি থেকে বাইকের চাবি ও তীর্থর কাছ থেকে নেওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। 

এ ঘটনার পর পুলিশের জেরার মুখে আমান হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৌফিক আনাম।

হত্যার কারণ হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, কেবল নেশার টাকা যোগাড় এবং ফুর্তি করার উদ্দেশে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তায়হান ইসলাম আমান বন্ধু তীর্থ রুদ্রকে গলাকেটে হত্যা করে। আর এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় একটি দোকান থেকে আমান তার মিঠু মামার নাম করে ৪০০ টাকা দিয়ে প্যাথেড্রিন ইনজেকশন কেনেন। আর বন্ধুকে গলাকেটে হত্যার জন্য শহরের সততা স্টোর থেকে কেনেন ধারাল একটি দা। সেই দা দিয়েই তীর্থকে হত্যা করেন আমান। 

তীর্থর বাবা নিমাই রুদ্র বলেন, আমান আমার ছেলের বন্ধু। কিন্তু শুধু নেশার কারণে বন্ধুকে হত্যা করেছে। এর যথাযথ বিচার হোক সেটিই চাই, যাতে অন্য কেউ বন্ধুর সঙ্গে বেঈমানী না করে।

মাগুরা সদর থানার ওসি শেখ মেহেদী রাসেল বলেন, আমানকে গ্রেফতারের পর সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বীকার করেছে। ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র এবং ভিকটিমের মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। 
 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম