যমুনার পানি বিপৎসীমার উপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। ছবি: সংগৃহীত
বগুড়ায় ভারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সারিয়াকান্দির যমুনা এবং বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীতে ৬৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় পানির সমতল ছিল ১৬.৫৭ মিটার। অর্থাৎ নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নদীতে পানি ৬৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে কয়েক দিন আগ থেকে উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলতাইড় ও মানিকদাইড় গ্রামে এবং কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার চালুয়াবাড়ি, কাজলা, কর্ণিবাড়ি, চন্দনবাইশা এবং বোহাইল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা তাদের অপরিপক্ব পাটগাছ কেটে নিচ্ছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, যমুনা নদীতে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে বন্যা শুরু হয়েছে। বিকাল পর্যন্ত ৭৫টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।
এতে সারিয়াকান্দি পৌরসভা, হাটশেরপুর, চালুয়াবাড়ি, কাজলা, কর্ণিবাড়ি, বোহাইল, কামালপুর, চন্দনবাইশা, কুতুবপুর, সারিয়াকান্দি সদর, নারচী, ফুলবাড়ি ও ভেলাবাড়ি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৯৭০ পরিবারের ৪১ হাজার ৩৭০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানি ৫৮টি বাড়িতে সম্পূর্ণ ও ১৯০টি বাড়িতে আংশিক প্রবেশ করেছে। ৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের মতে, দুই হাজার ৮৬০ কৃষক পরিবারের ৫৩০ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এক হাজার ৫০টি নলকূপ এবং ৩১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। ৫.৩৭ হেক্টর আয়তনের আটটি মৎস্য খামারে পানি ঢুকেছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, বিভিন্ন দপ্তর থেকে বন্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষেরা নৌকায় চলাচল করছেন। ইতোমধ্যে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, বন্যা মোকাবেলার প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। সব এলাকায় মাইকিং, রেসকিউ বোট ও অন্যান্য ইঞ্জিলচালিত নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ছয়টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র এবং কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।