ছবি: সংগৃহীত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছায় তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। বিপৎসীমার নিচে থাকলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে তিস্তার তীব্র স্রোতে নদীর র্তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার ২০টি ঘরবাড়ি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে তিস্তা নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে প্রতিদিন তিস্তা নদীতে ৫ থেকে ৬ সেন্টিমিটার পানি বাড়ে, আবার কমে যায়। এতে নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে নদী র্তীরবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। ডুবে গেছে বাদাম, পাটসহ শাক-সবজির ফসলি জমি।
বুধবার তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৭০০ পরিবার পানিবন্দি। এছাড়াও কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, হারাগাছ, শহীদবাগ ও টেপামধুপুর এবং পীরগাছা উপজেলা উপজেলার পাওটানা ছাওলা, তাম্বুলপুরসহ বিভিন্ন স্থানের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালীর চরের আনোয়ার হোসেন ও আমিনুর রহমানসহ কয়েকজন বলেন, ‘নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকলেও বন্যার পানি থেকেই যায়। বাড়ির কাছ দিয়া নদীর পানি যাইতোছে আর ভাঙতোছে। এই জন্তে বাড়ি সরায় নেওয়া লাগিল। নদী জমি-জমা কাড়ি নিল, ঘরবাড়িও নিয়া নেইল। এ্যালা হামরা কোটে যায়া থাকমো, কি খামো সেই চিন্তাত আছি’।
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজীবুল করিম বলেন, আমার উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন তিস্তা নদীবেষ্টিত। উপজেলায় দেড় হাজার পরিবার বর্তমানে পানিবন্দি রয়েছে। পানিবন্দি মানুষদের মধ্যে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বুধবার বিকাল ৩টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যদিও এ পয়েন্টে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চল আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারি এবং ৪৮ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে।