পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির আবাদ
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরের প্রায় ৩ হাজার পরিবার এখন পানিবন্ধী। তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির আবাদ। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মানিকের চরে তলিয়ে যাওয়া বাদাম রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বাবুল শেখ নামের এক চাষি।
জানা গেছে, মানিকের চরে শতাধিক পরিবার বসবাস করে। তারা পানিবন্ধী হয়ে আছে। তাদের মতো আরও ১৪টি চরের একই অবস্থা। তাদের আয়ের উৎস কৃষি কাজ। বর্তমানে চারদিকে পানি। জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এরমধ্যে বাবুল শেখ পানিয়ে তলিয়ে যাওয়া বাদাম রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।
পদ্মার ১৫টি চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে। পরিবার রয়েছে প্রায় ৩ হাজার। মানিকের চরের প্রায় প্রতিটি পরিবারই অন্যের জমি বাৎসরিক ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করে।
বাদাম চাষি বাবুল শেখ বলেন, মানিকের চরে ৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। এরমধ্যে তিন বিঘার বাদাম ওঠাতে পারলেও আরও তিন বিঘার বাদাম ওঠানোর আগে পদ্মার পানি চলে আসে। এগুলো ওঠানোর চেষ্টা করছি। এর আগে শ্রমিকের খুব সংকট ছিল।
এদিকে রাসেল ভাইপারের ভয়ে শ্রমিকরা কাজ করতে চায় নি। ফলে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। তবে তিন বিঘা জমির বাদাম এখন পানিতে তলিয়ে গেছে।
এই চরের আজগর আলী বলেন, আমি, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে অন্যের কাছে থেকে জমি ভাড়া নিয়ে দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছি। এরপর পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাগল ও গরু নিয়ে বিপদে আছি। এখন কৃষি কাজ নেই। কোন কোন সময়ে জাল দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে যে টাকা হয়, এই দিয়ে কোন রকম সংসার চলছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর জালাল উদ্দিন বলেন, পদ্মার চরের মধ্যে মানিকেরচর দিয়ারকাদিরপুর, টিকটিকিপাড়াচরসহ চকরাজাপুর ও কালিদাসখালির কিছু অংশ নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। এই ওয়ার্ডে পরিবার রয়েছে তিন শতাধিক। এর মধ্যে আমার ওয়ার্ডের অধিকাংশ ফসলি জমি নিচু। জমিতে রোপন করা বাদাম ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হবে। অধিকাংশ জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, পদ্মার চরে প্রায় ৩ হাজার পরিবার রয়েছে। তারা এখন পানিবন্ধি। চরের অধিকাংশ বাড়ির পাশে পানি। ৪৭৩ হেক্টর জমির মধ্যে অর্ধেক বাদাম ওঠাতে পারেনি চাষিরা। সেই বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে অনেকেই পানির নিচে ডুব দিয়ে বাদাম ওঠাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, কিছু নামলা বাদাম চাষিরা জমি থেকে ওঠাতে পারেনি। সেগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এর সাথে কিছু পাটও রয়েছে। বাদামের চাষ হয়েছে ৪৭৩ হেক্টর এবং পাটের আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭৮০ হেক্টর।