ক্লাস করে ফাঁকা শ্রেণিকক্ষে গিয়ে ফাঁস দিল নবম শ্রেণির ছাত্রী
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম
ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে আফিয়া জাহান (১৪) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের ফাঁকা একটি কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ওই ছাত্রী কয়েকটি ক্লাসে অংশ নেয় বলে জানা গেছে।
শ্রেণিকক্ষে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মৃত আফিয়া জাহান ঝালকাঠি সুগন্ধা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমির হোসেনের মেয়ে। তার মা ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করেন। তারা ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের কোয়াটারে বসবাস করতো।
মেয়েটির পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে ঝালকাঠি থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে কয়েক সহপাঠীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় আফিয়া জাহানের। রুবিনা সারা নামে এক সহপাঠী আফিয়ার নামে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। সে বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তাকে ও অভিযোগকারী সহপাঠীদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এসব কারণে আফিয়ার মন ভালো ছিল না।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুল আলম জানান, প্রভাতী শাখার ওই শিক্ষার্থী সোমবার সকালে ক্লাসে আসে। কয়েকটি ক্লাসে অংশও নেয় সে। পরে বিদ্যালয়ের গণেশ ভবনের চতুর্থ তলায় খালি থাকা একটি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। তাকে খুঁজতে আসা শিক্ষার্থীরা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে চিৎকার করলে শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিক্ষার্থীর বাবা শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, সকালে বাসা থেকে খুব স্বাভাবিকভাবেই স্কুলে যায় সে। পরে আমাদের শিক্ষকরা ফোনে জানায়, আপনার মেয়ে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে ওকে আর জীবিত পাইনি। শুনেছি আমার মেয়ের সঙ্গে কয়েক সহপাঠীর সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। এ নিয়ে শিক্ষকরা উভয়পক্ষকে ডেকে সমাধান করে দিলেও সমস্যা থেকেই যায়। এসব কারণে হয়তো সে আত্মহত্যা করতে পারে।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম আরও জানান, ওই শিক্ষার্থী কী কারণে আত্মহত্যা করেছে তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।