সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধার এ কেমন জীবন!
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
রাত্রী যাপন করেন যাত্রী ‘পুলিশ চেকপোস্টে’। সড়কে চলাচল করা পথচারীকে দেখে স্বাভাবিকভাবে কথাও বলেন। প্রায় এক বছর ধরে সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা বসবাস করছেন যাত্রী পুলিশ চেকপোস্টে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, তিনি স্বাভাবিক। উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের মজুমদারখীল মরিয়মনগর চৌমুহনী-রাণীরহাট সড়কের পাশে যাত্রী ছাউনিতে বসবাস তার। সম্প্রতি ওই এলাকায় গেলে তিনি প্রতিবেদককে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করেন। নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার নাম ফাতেমা ও গ্রামের নাম সৈয়দবাড়ি ছাড়া আর কিছু বলতে পারেন না।
যাত্রী ছাউনিতে হাঁড়ি-পতিল, লাকড়ি, কাঁথা বালিশসহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস দেখা যায়। তবে এর আশপাশ অস্বাস্থ্যকর ও খুব দুর্গন্ধ হয়ে আছে।
স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুর উল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ চেকপোস্ট’ নামে ছাউনিতে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছেন এই বৃদ্ধা। সড়কের পাশে জায়গাটি খুবই নির্জন হওয়ার কারণে এক সময় ওখানে রাতে গাড়ি থামিয়ে প্রায় ছিনতাই হতো। ছিনতাই ঠেকাতে ২০১২ সালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাতের বেলায় ঝড়-বৃষ্টিতে পুলিশের কর্তব্য পালনের জন্য ‘পুলিশ চেকপোস্ট’ নামে টিনশেড দিয়ে পাকা একটি কক্ষ তৈরি করে দেওয়া হয়। ওখানে ওই বৃদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে সড়কের পাশে কাঁথা-বালিশ নিয়ে রাত্রী যাপন করেন। খাবারও ওখানে খান। তাকে অন্যত্র সরিয়ে যাত্রী ছাউনিটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
স্থানীয়রা বলেন, ওই বৃদ্ধা মধ্যে মধ্যে অসংলগ্ন কথা বললেও বেশির ভাগ পথচারিদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বলেন। পুলিশ চেকপোস্টটি ব্যবহারের উপযোগী করলেও ওই নারীকে আগে পুনর্বাসন করা দরকার বলছেন স্থানীয় লোকজন।
রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দবাড়ি এলাকার কাউন্সিলর কপিল উদ্দিন সিকদার বলেন, বৃদ্ধার বাবার বাড়ি আমার ওয়ার্ডে। শ্বশুর বাড়ি কোথায় জানা নেই। তার স্বামী, ছেলে-মেয়ে কেউ নেই। এখানে আত্মীয়-স্বজন থাকলেও তারা ওই বৃদ্ধাকে তাদের ঘরে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি থাকেন না। তিনি কোনো কারণে হয়ত নিজের মতো করে থাকতে চান। ওই বৃদ্ধা স্বাভাবিক কথা-বার্তা বলেন। তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলা যাচ্ছে না। তিনি যে যাত্রী ছাউনিতে থাকেন ওটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত রয়েছে। ওই বৃদ্ধাকে মানবিক কারণে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন মনে করি।