সেতু ভেঙে ৯ জনের মৃত্যু, দুটি তদন্ত কমিটি গঠন
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম
সেতু ভেঙে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেষ বিশ্বাসকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। শনিবার রাতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমার নির্দেশ দেওয়া হয়। অপরদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর আরেকটি তিন সদস্য কমিটি গঠন করেছে। পটুয়াখালী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মহির উদ্দিন শেখকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে চাওড়া নদীতে তলিয়ে যাওয়া মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ চেইন কপ্পা দিয়ে এ মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করেছেন। রোববার তদন্ত কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে মরিয়ম বিল্লাহ হুমায়রার সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডা. সোহাগের বিয়ে হয়। গত শুক্রবার ওই কনেকে বরের বাড়ি তুলে নেন। শনিবার মেয়ের পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে মাইক্রোবাস এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে হলদিয়া হাট সেতু পাড় হওয়ার সময় সেতুর মাঝের অংশ ভেঙে মাইক্রোবাস ও অটো নদীতে তলিয়ে যায়। অটোতে থাকা যাত্রীরা সবাই সাঁতরে কিনারে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নদীতে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা ওই মাইক্রোবাসে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী নাসির উদ্দিন। ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা কনে পক্ষের ৯ যাত্রী মারা যান।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেশ বিশ্বাসকে প্রধান এবং আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— সহকারী পুলিশ সুপার আমতলী সার্কেল রুহুল আমিন, এলজিইডির বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খান, বিআরটিএ সহকারী পরিচালক মাহফুজ আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স উপ-সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। সাত কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধানপূর্বক তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পটুয়াখালী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মহির উদ্দিন শেখকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— নির্বাহী প্রকৌশলী এসি অফিস বরিশাল নুরুস সাম ও এলজিইডি বরগুনা সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান। রোববার তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তকাজ শুরু করেছেন। এদিকে শনিবার গভীর রাতে আমতলী থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা চেইন কপ্পা দিয়ে নদীতে ডুবে যাওয়া মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করেছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই মাইক্রোবাসের মধ্যে আর কোনো লাশ পাওয়া যায়নি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, বরগুনা জেলা প্রশাসক ছয় সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেশ বিশ্বাস বলেন, তদন্তকাজ শুরু করেছি। রোববার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সভাশেষে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ছয় সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।