ডেকচি ভর্তি খাবার খাওয়ার মানুষ নেই, থামছে না কান্না
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম
ছবি: যুগান্তর
ব্রিজ ভেঙে বিয়ের কনের পক্ষের ৯ জন মারা যাওয়ায় বর ডা. সোহাগ ও কনে হুমায়রার বাড়িতে শোকের মাতম বইছে। বরের বাড়িতে সুনসান নীরবতা। কনের বাড়িতে বইছে কান্নার রোল।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা কাউনিয়া ইব্রাহিম অ্যাকাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডা. সোহাগের বিয়ে হয়।
শুক্রবার কনেকে বরের বাড়ি নিয়ে আসেন। পরদিন শনিবার মেয়ের পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে মাইক্রো এবং অটো যোগে যাচ্ছিলেন। পথে হলদিয়া ব্রিজ পার হওয়ার সময় মাঝের অংশ ভেঙে যায়।
এতে মাইক্রোবাস ও অটো গাড়ি নদীতে পড়ে যায়। অটোতে থাকা যাত্রীরা সবাই সাঁতরে নদীর কিনারে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নদীতে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান। ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা কনে পক্ষের ৯ যাত্রী মারা যান।
নিহতরা হলেন- রুবিয়া (৪৫), রাইতি (২২), ফাতেমা (৫৫), জাকিয়া (৩৫), রুকাইয়াত ইসলাম (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদ (৭), তাসফিয়া (১৪), ঋধি (৪) ও শাহনাজ আক্তার রুবি বেগম (৩৫)।
এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে।
অপর নিহত ৭ জনের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামের বাসিন্দা। এরা কনে হুমায়রার মামা বাড়ির আত্মীয়স্বজন। এমন ঘটনায় বর ডা. সোহাগ ও কনের হুমায়রার বাড়িতে শোকের মাতম বইছে।
শনিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা গেছে, বর ডা. সোহাগের বাড়িতে সুনসান নিরবতা। ডেকচিভরা খাবার রয়েছে। মানুষজন নেই।
বরের বাবা কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিম মাহমুদ বলেন, এমন ঘটনার আমি হতভম্ব। কনে পক্ষের লোকজনের জন্য সব আয়োজন ছিল কিন্তু একটি ফোন কলে সব কিছু ভেস্তে চলে গেল।
কনের বাবা মাসুম বিল্লাহ মনির বলেন, আমার কিছুই বলার নেই। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির মানুষকে কী জবাব দেব? আল্লায় কেন আমার ওপর এতো বড় বিপদ দিল।