পার্বত্য শান্তিচুক্তি বানচালে নানা ষড়যন্ত্র চলছে: সন্তু লারমা
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। ছবি : সংগৃহীত
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের দীর্ঘ ২৬ বছর পার হয়ে গেলেও আজও তা বাস্তবায়ন হতে পারেনি। সরকার চুক্তি স্বাক্ষর করলেও বাস্তবায়নে আন্তরিক নয়। উলটো এ চুক্তির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। বর্তমানে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বানচালে যা কিছু দরকার, সেসব নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এতে সরকারের বিশেষ মহল জড়িত।
তিনি বলেন, এ চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়িত না হলে জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব একেবারে বিলীন হয়ে যাবে। তাই ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বহালসহ পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সার্কেল চিফ, হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) ও কারবারিদের (গ্রামপ্রধান) অগ্রণী ভূমিকায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সন্তু লারমা।
শুক্রবার রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা সদরের রাজবাড়ী রাজদ্বীপ এলাকার হেডম্যান নেটওয়ার্ক কার্যালয় মিলনায়তনে সংগঠনটির সভাপতি কংজুরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চিফ সাচিংপ্রু চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাঙামাটি জেলা হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা, সিএইচটি নারী হেডম্যান-কারবারি নেটওয়ার্কের সভাপতি জয়া ত্রিপুরা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা।
সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন জুম্ম জাতির বিলুপ্তিকরণ ষড়যন্ত্র চলে আসছে। এছাড়া চলছে বাঙালিকরণ, ইসলামিকরণ ষড়যন্ত্র। ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের প্রক্রিয়া এসব ষড়যন্ত্রের প্রকাশ্য রূপ। এখানে আজও সেনাশাসন অব্যাহত রয়েছে। তীব্র গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। এ আন্দোলনে জুম্ম জনগণ সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান সন্তু লারমা। বক্তব্য শেষে সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের নবনির্বাচিত কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করেন তিনি। তিন বছর মেয়াদে নির্বাচিত ৩১ সদস্যের কমিটিতে সভাপতি পদে কংজুরী চৌধুরী ও সম্পাদক পদে শান্তি বিজয় চাকমা আবারও নির্বাচিত হয়েছেন।
ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা যেভাবেই হোক প্রতিহত করতে হবে।