
প্রিন্ট: ৩১ মার্চ ২০২৫, ০১:৫৭ এএম
তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফের ২৬৪ বস্তা চাল বিক্রির অভিযোগ

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০৭:৩৬ পিএম

আরও পড়ুন
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে উপজেলার তিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২১ জুন) সকালে পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের একটি দোকানে এ চাল বিক্রির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ঈদের দুই দিন আগে গত ১৫ জুন কালীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নসিমনে ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুরের খালিশপুরে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। বস্তাগুলো খাদ্য অধিদপ্তরের স্টিকারযুক্ত। তবে এগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়ির চালকের কাছে তিনটি বিলি আদেশ (ডিও) পাওয়া গেছে। বিলি আদেশগুলোতে কালীগঞ্জ উপজেলার ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দকৃত চালের বিষয়টি উল্লেখ ছিল।
উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুন চালগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের জন্য ২.৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের জন্য ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের জন্য ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব চাল দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দ; যা কুরবানির ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল।
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এক গাড়ির চালককে বলতে শোনা যায়- কালীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারের দীপু দাদার দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়িটাই শেষ। এর আগে তিন গাড়ি গিয়েছে। মোট ৪ গাড়ি চাল বেরিয়েছে। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল।
ভিডিও ধারণ করা যুবক রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, গত শনিবার (১৫ জুন) বিকাল ৫টার দিকে সরকারি ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি ধারণ করি। ৪টি গাড়িতে এসব চাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের এ চাল না দিয়ে বিক্রি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, বিষয়টি আমি জানি না, খোঁজ নিচ্ছি।
৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ফোনে আমি কিছুই বলব না। আপনি সরাসরি ইউনিয়নে এলে সব বলব।
এদিকে ৮নং মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব বলেন, গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেওয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে আমরা চাল প্রদান করি। এখন এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে সেটা আমি জানি না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।