যমুনায় পানি বৃদ্ধি, জনমনে আতঙ্ক
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০৪:১৯ পিএম
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশে যমুনা নদীতে বাড়ছে পানি, বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক। ইতোমধ্যে নদীর পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে গাবসারার পুরো ইউনিয়ন এবং অর্জুনা, নিকরাইল, গোবিন্দাসী ইউনিয়ন এবং ভূঞাপুর পৌরসভার একাংশ যমুনা সিকস্তি নদী বিধৌত এলাকা। এখানে প্রতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ে।
গত বছর ভাঙনের পর যেটুকু জায়গা জমি ও ভিটেবাড়ি অবশিষ্ট ছিল, সেটুকুও ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশায় দিন পার করছেন নদীপাড়ের শত শত পরিবার। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের চুন্দনী, মেঘারপটল, শুশুয়া, চাঁনগঞ্জ, গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া, নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ী, অর্জুনা ইউনিয়নের ডিগ্রির চর ও তালতলা এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে দিশাহারা নদীপাড়ের মানুষগুলো।
নদীপাড়ের মানুষের অভিযোগ, গত বছর ভাঙন রোধে খানুরবাড়ী, চিতুলিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে নামমাত্র নিম্নমানের জিওব্যাগ ফেলেছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেগুলো এখন ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রভাব খাঁটিয়ে নিজ নিজ বাড়ির সামনে জিওব্যাগ ফেলেছেন। দরিদ্র পরিবারের বাড়ির সামনে জিওব্যাগ ফেলা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত বছর ভাঙনের শিকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, শুকনো মৌসুমে বালু ব্যবসায়ীরা অবধৈভাবে নদীতে জেগে ওঠা চর কেটে ট্রাকযোগে মাটি বিক্রি করে। এতে নদীর গতিপথ পরির্বতন হয়ে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় না। যার কারণে নদীতে পানি আসলে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
পাটিতাপাড়ার রমেছা, সুফিয়া ও কোরবান আলী বলেন, যমুনা নদীতে গত কয়েক দিন ধরে পানি বাড়ছে। পাানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বলেন, কিছু দিন ধরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাঙনের বিষয়টি আমার জানা নেই। ভাঙন রোধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করাসহ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব এবং ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভূঞাপুরে ভাঙনের বিষয়টি ইউএনওর মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ভাঙন এলাকাগুলোর মধ্যে গোবিন্দাসী ও নিকরাইলের জন্য একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকার ইকোনমিক জোনের কাজ শুরু হলে স্থায়ী বাঁধ হয়ে যাবে।