Logo
Logo
×

সারাদেশ

উব্দাখালীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপরে

Icon

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৬:৩৭ এএম

উব্দাখালীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপরে

টানা দুই দিনের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা ও কলমাকান্দা উপজেলার অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি, পোগলা, বড়খাপন, কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ওই উপজেলার বড় নদী উব্দাখালীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার ছয়টার দিকে ওই নদীর কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। তিন উপজেলার অন্তত ৫০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার  খবর পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া কলমাকান্দার মহাদেও, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, সদর ও বারহাট্টা উপজেলার কংস, মগড়া, খালিয়াজুরির ধনুসহ বিভিন্ন ছোট-বড় নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। বন্যার পানি বাড়িঘরে ঢুকে যাওয়ায় সাতটি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।

নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার থেকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। একই সময়ে, অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও জারিয়াঝাঞ্জাইল স্টেশনে ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৬১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি ও সুনামগঞ্জে ৫২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এতে জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এ ছাড়া ওই উপজেলার মহাদেও, বৈঠাখালী, মঙ্গলেশ্বরী ও গণেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি উঠেছে।

কৈলাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বেনুয়া, চানকোনা, খলা, সাকুয়া, ইন্দ্রপুর, বিষমপুর, চারিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। কয়েকটি বাড়ির উঠানে ও কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। আর এক থেকে দেড় ফুট পানি বাড়লে প্রচুর বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাবে।’

বারহাট্টার রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু বলেন, আমার ইউনিয়নের অন্তত ১২টি গ্রাম এরিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরাকোণা-ফকিরের বাজার সড়কের চরপাড়ায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ কেটে রাখায় অন্তত আরও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, বন্যার পানিতে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এ ছাড়া কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের বিশরপাশা এলাকায় সাতটি পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাদের বিশরপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। সঙ্গে গৃহপালিত প্রাণীগুলোকেও নিরাপদে রাখা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রাখা আছে।

নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রুহী বলেন, আমি দুর্গাপুর কলমাকান্দার বেশ কিছু গ্রামের প্লাবিত মানুষের বাড়ি-ঘরে গিয়েছি। তাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্লাবিত এলাকার আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি বাড়লে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।

জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, বন্যা প্লাবিত এলাকায় সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রাখা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম