Logo
Logo
×

সারাদেশ

ফেঞ্চুগঞ্জে ত্রাণের জন্য হাহাকার

Icon

ফেঞ্চুগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৬:২৫ এএম

ফেঞ্চুগঞ্জে ত্রাণের জন্য হাহাকার

উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা। বন্যা কবলিত উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তিনদিন ধরে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন বানভাসি মানুষ। এমন ভয়াবহ বন্যায় দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে। খাদ্যের অভাবে ছেলে-মেয়ে নিয়ে মহাসংকটে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্গত মানুষের দুর্ভোগ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯২ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলে নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

এদিকে ফেঞ্চুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বন্যা কবলিত মানুষ সড়ক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বসতভিটায় বন্যার পানি উঠায় কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। উপজেলার কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী পিঠাইটিকর, ছত্তিশ, ভেলকোনা, উত্তর ইসলামপুর, মল্লিকপুর, চানপুর, মোমিনপুর, বারোহাল, জেটিঘাট, দনারাম, যুধিষ্ঠিপুর, বাদেদেউলী, বাঘমারা, ইলাশপুর, দিনপুর, মাঝপাড়া, মুহিদপুর, কোনাপাড়া, সুলতানপুর, গঙ্গাপুর, গয়াসী গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জ পূর্ব বাজার, মধ্যবাজার ও থানার রোড পয়েন্টের প্রায় দুই শতাধিক দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। হঠাৎ করে দোকানে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়ীরা দোকানের মেঝেতে ইট বিছিয়ে মালামাল সরাচ্ছেন। অনেকে মালামাল সরিয়ে ফেলছেন। মানুষজন হাঁটু পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন। বন্যার্ত এলাকায় মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউ কেউ বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দেখে অন্যত্র আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।

পিঠাইটিকর গ্রামের আনিছুর রহমান বলেন, তিনদিন ধরে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এখনো মানুষ ত্রাণ সহায়তা পাননি। দিনমজুর মানুষেরা বন্যায় বিপাকে পড়েছেন। একই গ্রামের লাভলু মিয়া বলেন, আমি দিনমজুর। আমার ঘরে কোমর সমান পানি। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি বউ-বাচ্চা নিয়ে। এখনো কোনো খাদ্য সহায়তা পায়নি। খুব কষ্টের মধ্যে আছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, সরকারি বরাদ্দের চাল দিয়ে জনপ্রতিনিধি ও ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতাদের সহযোগিতায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চান না। এটা একটা সমস্যা। তারপরও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের আমি বলে দিয়েছি তাদের তালিকা করার জন্য, প্রয়োজনে আমি শুকনো খাবার নিয়ে তাদের বাড়ি বাড়ি যাব। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ২৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭৫৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকার কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে চাইলে আমরা তাৎক্ষণিক তা খুলে দিচ্ছি। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম