Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘দ্যাশে রাখমু না, টাহা ফেরত দেবা থাকতে পারবা’

Icon

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম

‘দ্যাশে রাখমু না, টাহা ফেরত দেবা থাকতে পারবা’

‘দ্যাশে রাখমু না, টাহা দেবা না, দ্যাশে থাকতে পারবা না, টাকা ফেরত দেবা থাকতে পারবা, কথা হইলো সোজা। আবু বকরের কাছ থেকে টাহা নেছো, হেই টাকা ফেরত দেবা। তোমরা ঘোড়া মার্কা সার্পোট করছো, আবু বকরের সার্পোট তো করো নাই, টাহা লইয়া রাস্তায় উঠবি।’ 

মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী খান মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিককে সমর্থন এবং ভোট না দেওয়ায় অঙ্কন হালদার পার্থ (২৩) নামে এক যুবককে ফোন করে এমন হুমকি-ধমকি দেন নির্বাচনে বিজয়ী আবু বকরের কর্মী-সমর্থক মিরাজ খলিফা ও লিটন আকন। এ সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ যুগান্তরের হাতে এসেছে। 

এরপর পার্থর পারিবারের ওপর হামলা চালান আবু বকরের লোকজন। ৯ জুন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবু বকর সিদ্দিককে সমর্থন এবং ভোট না দেওয়ার জেরে হামলা-সংঘাতের শিকার হয়েছে একাধিক পরিবার। সংঘাত এড়াতে কেউ কেউ আত্মগোপনে রয়েছেন। 

পার্থর পরিবারের অভিযোগ- নির্বাচনের আগে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাবদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক তাদের ১০ হাজার টাকা দেন। এরপর নির্বাচন আসলে চেয়ারম্যান পদে আবু বকর সিদ্দিক এবং ভাইস-চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম অংশ নিলে পার্থর পরিবার জহিরুল ইসলামের পক্ষ করেন। ৯ জুনের ভোটে আবু বকর বিজয়ী হলে আবু বকরের কর্মী-সমর্থক মিরাজ খলিফা ও লিটন আকন পার্থকে ফোন করে ১০ হাজার টাকা ফেরত চেয়ে দেশ ছাড়ার হুমকি দেন। 

১১ জুন বিকালে পার্থর পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে বৃদ্ধসহ ৫ জনকে আহত করে। ভোট না দেওয়ার অভিযোগে বিধান হাওলাদার, কমল হাওলাদার, পঙ্কজ হাওলাদার, পবিত্র হাওলাদার ভবরঞ্জন হাওলাদারের বসত-ঘরে ভাংচুর-লুটপাট ও মারধর চালান আবু বকরের কর্মী-সমর্থক মামুন মৃধা, ইউসুফ মৃধা, নশা মৃধা, রাজু বিশ্বাস, নাসির মৃধা, সুধান মাতব্বর, তমাল ভক্ত ও অন্তর সোমাদ্দারসহ অনেকে। পরে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় এলাকা ছাড়েন বিধান, উজ্জল ও কমল। 

যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পর আবু বকরের লোকজন দলীয় অফিসে ভাংচুর করে। 

পরাজিত প্রার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পর থেকে বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় তাণ্ডব চালানো অব্যাহত রেখেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বেশি হামলার শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছেন। 

অভিযুক্ত মিরাজ খলিফা বলেন, আমার মামা আবু বকরকে ভোট দেওয়ার কথা বলে পার্থ ১০ হাজার টাকা নিয়ে জহিরুলের পক্ষ নেন। ওই টাকা ফেরত চাইছি, মারধর ও কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি। 

মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল আজীজ ও তার মেয়ে মোসা. আসমা বেগম বলেন, আবু বকরকে সমর্থন এবং ভোট না দেওয়ায় রাজীব, রাকিব মৃধা, নাইম মৃধা, রাব্বিসহ তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা তাদের বসত-ঘরে ভাংচুর লুটপাট ও মারধর করে। 

এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিজয়ী প্রার্থী খান মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, নির্বাচনের পর থেকে আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। এসব আমার জানা নেই। তবে একটি মহল আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব করছে। 

মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতায় চারটি পৃথক মামলায় চারজন আটক হয়েছেন। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম