Logo
Logo
×

সারাদেশ

গোয়ালন্দের চরাঞ্চলে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক, দেড়মাসে ৩ মৃত্যু

Icon

রাজবাড়ী প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম

গোয়ালন্দের চরাঞ্চলে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক, দেড়মাসে ৩ মৃত্যু

গ্রাফিক্স: যুগান্তর

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চর মজলিশপুর, মহিদাপুর, দেবীপুর, চর করনেশন ও অঙ্কের শেখের পাড়াসহ পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলে ভয়ংকর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নাম পরিচিত এই সাপ। গত দেড়মাসে ওই অঞ্চলে সাপে কেটে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গোয়ালন্দ উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় দুর্গম চরাঞ্চলে রাসেল হত্যার আতঙ্কের বিষয়টি উঠে আসে।  উপজেলা প্রশাসন থেকে কৃষকদের মাঝে গামবুট বিতরণ প্রদানের কথা জানানো হয়েছে। 


সরেজমিন সোমবার গোয়ালন্দের চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়। উজানচর ইউনিয়নের মজলিশপুর এলাকার কৃষক জমির আলী বলেন, সোমবার (২৭ মে) দুপুরে মজলিশপুরে মাঠে কাজ করার সময় শামীম শেখসহ (২২) কয়েকজন পদ্মা নদী থেকে নৌকা তীরে টেনে তুলছিল। নৌকার নিচে থাকা রাসেলস ভাইপার তার পায়ে কামড় দেয়।  লোকজন সাপটি মেরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। চিকিৎসা অবস্থায় পরদিন বিকালে শামীম মারা যায়। 


স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত ৮ এপ্রিল মজলিশপুর এলাকায় খেত থেকে ভুট্টা তোলার সময় সাঈদুল শেখ নামের এক কৃষককে সাপে কাটে।  তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।  অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সপ্তাহ পর মারা যান।  গত ২৯ মার্চ উজানচর ইউপির চর দেবীপুর মাঠে কাজ করা অবস্থায় এক কিষানীকে সাপে কামড়ায়। তাকেও ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে প্রায় দুই সপ্তাহ পর নিজ বাড়িতে আনার পর মৃত্যু হয়।  

চর করনেশনা এলাকার কিষানী বলেন, চরাঞ্চল জুড়ে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক বিরাজ করছে। মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়ির পুরুষরা সাপ মেরে মাটিতে পুঁতে ফেলছে।  চর মজলিশপুর গ্রামের কৃষক আজিজ শেখ বলেন, মাঠে কাজ করতে গিয়ে তারা রাসেলস ভাইপার সাপের ভয়ে জমির ফসল কাটাসহ কোনো কাজই তারা করতে পারছেন না।  বলা যায় আতঙ্কের মধ্যে তারা রয়েছেন। 

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, মার্চ মাসে একজন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আসলে ফরিদপুর রেফার্ড করা হয়। এপ্রিল মাসে একজন এবং মে মাসে দুইজন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সাপেকাটা রোগী ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি হাসপাতালে আনতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণ অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন রয়েছে।  সাপেকাটার পর সময় মতো চিকিৎসা দিলে রোগী বেঁচে যাবে। 

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাসেল ভাইপার মতো বিষধর সাপের উপদ্রুত বাড়ায় আমরা চিন্তিত। উপজেলা পরিষদ থেকে চরাঞ্চলের ১০০ জন কৃষকের মাঝে বিশেষ ধরনের গামবুট জুতা বিতরণ হবে।  প্রয়োজনে শ্রমিকদের মাঝেও দেওয়া হবে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম