চিকিৎসার নামে স্ত্রীর সম্ভ্রমহানি, কবিরাজকে গলা কেটে হত্যা স্বামীর
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৪, ১০:৫৩ পিএম
চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসার নামে স্ত্রীর সম্ভ্রমহানি করায় কবিরাজ আব্দুর রাজ্জাক রাজাইকে গলা কেটে হত্যা করেন স্বামী। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মূল আসামি রুবেল মিয়া ও সহযোগী সোহেল রানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জেলার পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতার হওয়া আসামিরা সম্ভ্রমহানির প্রতিশোধ নিতে হত্যা করেছে বলে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজেলার সুবদিয়া গ্রামের আব্দুর সেলিমের ছেলে রুবেল মিয়া (২৩) ও একই এলাকার আনিসের ছেলে সোহেল রানা (২০)। এ ঘটনায় ব্যবহৃত ধারালো চাকু, মোটরসাইকেল ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান জানান, ভিকটিম আব্দুর রাজ্জাক (৫০) কবিরাজি করে মানুষের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা প্রদান করতেন। আসামি রুবেল মিয়া ও তার স্ত্রী শারীরিক চিকিৎসার জন্য ভিকটিম আব্দুর রাজ্জাকের শরণাপন্ন হলে গত ৩১ মে সন্ধ্যায় আব্দুর রাজ্জাক জিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে আসামি রুবেল ও তার স্ত্রীকে সদর থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামের নবগঙ্গা ব্রিজ এলাকায় পান বরজের কাছে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় এবং আসামিকে সিগারেট আনতে দোকানে পাঠায়। কিছুক্ষণ পরে আসামি রুবেল পান বরজের এসে কবিরাজ রাজ্জাক ও তার স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে আসামীর স্ত্রীর মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পায়।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে আনুমানিক ৩৫-৪০ মিনিট পরে ভিকটিম ও আসামির স্ত্রী পানবরজের কাছে ফিরে এসে তার স্ত্রীকে দেখে খারাপ কোনো কাজ করেছে বলে সন্দেহ পোষণ করে। পরবর্তীতে আসামি বাড়িতে এসে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার স্ত্রী কান্নাকাটির একপর্যায়ে স্বীকার করে আব্দুর রাজ্জাক কবিরাজ চিকিৎসা দেওয়ার নামে সম্ভ্রমহানি করেছে।
ওই রাতেই আসামি রুবেল তার সহযোগী সোহেল রানাকে সঙ্গে নিয়ে কৌশলে ডেকে মোটরসাইকেলে তুলে ধারাল ছুরি দিয়ে আব্দুর রাজ্জাকের গলায় পোঁচ দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই পুলিশের বিভিন্ন টিম মাঠে মাঠে এবং হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনসহ ঘাতকদের গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নতুন ভান্ডারদহ-জুগিরহুদা রাস্তার পাশে মাঠ থেকে আব্দুর রাজ্জাক (৫০) নামে এক কবিরাজের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই আসামি গ্রেফতারসহ তদন্তে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।