বিদ্যুৎহীন হাসপাতালে মোবাইলের আলোয় ২ নবজাতকের জন্ম
হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ১০:০৫ পিএম
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এর মধ্যেই সোমবার রাতে মোবাইল টর্চের আলোয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে দুই নবজাতককে পৃথিবীর আলো দেখান ডা. সুমাইয়া বিনতে ফরহাদ।
জানা যায়, হাতিয়া উপজেলার দূরবর্তী ইউনিয়ন চরকিং থেকে রাত ১২টায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ফ্যান্সি বেগম (৩০)। বিদ্যুৎহীন রাতে মোবাইল টর্চের আলোয় একটি ফুটফুটে কন্যাশিশু জন্মের মাধ্যমে তিনি ৫ম বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু প্রসবের পর তার প্রসবপরবর্তী রক্তক্ষরণ শুরু হয়। হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ইউএনএফপিএর সাপোর্টে এবং পার্টনার্স ইন হেলথ ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক নিয়োগকৃত ডা. সুমাইয়া বিনতে ফরহাদ এবং মিডওয়াইফ সাবরিনার আন্তরিক চেষ্টায় মায়ের সুস্থভাবে নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব হয়। সেই সঙ্গে ব্লাড ট্রান্সফিউশন এবং সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে রোগীর শক ও প্রসবপরবর্তী রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম হন তারা।
দ্বিতীয় রোগী হাতিয়া উপজেলায় নিজ বাসায় ডেলিভারির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবস্ট্রাক্টেড লেবার নিয়ে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। রোগীর হিমোগ্লোবিন ৬.৫ শতাংশ থাকায় জরুরিভিত্তিতে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে ডা. সুমাইয়ার তত্ত্বাবধানে মিডওয়াইফ মিম এবং সাবরিনার সহোযোগিতায় মোবাইল টর্চের আলোয় ওই রোগীরও স্বাভাবিক প্রসব করানো সম্ভব হয়; কিন্তু প্রসবপরবর্তীতে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়। বর্তমানে দুই মা ও দুই শিশু সুস্থ আছে।
ডা. সুমাইয়া বিনতে ফরহাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে হাতিয়া উপজেলায় গত ২৬ মে রাত থেকে ইলেক্ট্রিসিটি ছিল না। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব চালছিল। প্রসূতি দুইজনের অবস্থাই খারাপ ছিল। সব কিছু মিলিয়ে যে কী অবস্থা পার করেছি আল্লাহ ভালো জানেন। শেষে মোবাইল ফোনের টর্চের আলোর সহায়তায় দুইজন মা ও শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ না থাকা সত্ত্বেও মোবাইল ফোনের আলো দিয়ে নরমাল ডেলিভারিতে দুই নবজাতকের জন্ম হয়েছে। বর্তমানে দুই মা ও নবজাতক উভয়েই সুস্থ আছেন।