আ.লীগের দুই কর্মীর সংঘর্ষে গুলি, নেতার মৃত্যু!
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম
আনারস প্রার্থীর পক্ষে আনন্দ মিছিল শেষে এলাকায় চা দোকানের সামনে অবস্থান নেয় সবুজ ও বকুল নামের দুই আওয়ামী লীগ কর্মী। পরে জুনিয়র সিনিয়রের কাছে সিগারেট চাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় দুপক্ষের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৮ জন আহত হন।
একই সময়ে জামিল খান নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা দুই কর্মীর মারামারি থামাতে নিজের শটগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলে হৃদরোগে আক্তান্ত হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
অন্যদিকে মাথায় গুরুতর আহত নুরনবীকে (৪০) ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনাটি বুধবার রাতে প্রকাশ হওয়ায় রায়পুরে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত ৮টায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউপির ২নং ওয়ার্ডের খানবাড়ির সামনে আবুল কাশেম খানের চা দোকানের সামনে।।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের পরিবার জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনারসের প্রার্থী অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ বিজয়ী হলে আনন্দ মিছিল নিয়ে হায়দরগঞ্জ বাজারে বিটিএমের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনের বাড়িতে যান বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা। মিছিল শেষে উত্তর চরবংশী ইউপির তালতলা বাজারের পাশে খানবাড়ির সামনে অবস্থান নেন তারা।
এ সময় আবুল কাশেমের চা দোকানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী সবুজ তার সিনিয়র নেতা বকুলের কাছে ১টা সিগারেট চায়। এ নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ৮ জন আহত হন। তার মধ্যে সবুজের স্বজন নুরনবীর মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে সে মাটিতে লুটে পড়ে। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে রায়পুর হাসপাতাল পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকায় একটি হাসপাতাল পাঠানো হয়।
এ সময় দুপক্ষকে বাধা দিতে আওয়ামী লীগ নেতা জামিল খান তার ব্যবহৃত বন্দুক দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এ সময় তিনি স্ট্রোক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে রায়পুর সেবা হাসপাতালে নিলে তিনিও মারা যান। তবে তার ব্যবহৃত লাইসেন্সপ্রাপ্ত দুটি অস্ত্র থানায় জমা দেননি।
স্থানীয় চা দোকানদার আবুল কাশেমসহ (৬০) কয়েকজন বলেন, আনারসের পক্ষে আনন্দ মিছিল শেষে কর্মীরা চা দোকানের সামনে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় সবুজ মাঝি তার সিনিয়র বকুল সর্দারের কাছে সিগারেট চায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বকুল সবুজকে থাপ্পড় মারেন। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি একপর্যায়ে মারামারি হয়।
মৃত জামিল খানের স্ত্রী জোসনা আহাম্মেদ বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। দুপক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তার কাছে দুটি অস্ত্র থাকার বিষয়ে পল্টন থানা পুলিশ অবগত আছেন। এ বিষয়ে রায়পুর থানা পুলিশকে জানানো হবে।
এ ঘটনায় রায়পুর থানার ওসি ইয়াসিন ফারুখ মজুমদার বলেন, আনারসের প্রার্থীর বিজয়ে আনন্দ মিছিল শেষে স্ট্রোক করে আওয়ামী লীগ নেতা জামিল খানের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে এমপি নুর উদ্দিন চৌধুরীর ও আমিসহ সবাই জানাজা শেষে দাফন করে থানায় এসেছি। তবে মারামারি ও ফাঁকা গুলি ছোড়া এসব বিষয় তো কিছুই জানি না। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।