‘এদের বোকা বানিয়ে টাউনের লোকজন সম্পদের পাহাড় গড়েছেন’
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হাসান খোকন বলেছেন, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন মাথায় টুপি দিয়ে নয়া মৌলভী সেজেছেন, আরেকজন মন্দিরে পুরোহিত হয়ে নির্বাচনি প্রচারণা করছেন।
একজন প্রার্থীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, হিন্দু ভোটগুলো কি তোর বাপের! এটা তোমাদের ইজারা দেওয়া হয়নি। বাংলা হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলিম আমরা সবাই বাঙালি। হামার গ্রামের মানুষগুলো সরল সোজা। গ্রামের কী হিন্দু, কী মুসলিম তারা অতি সরল-সহজ। এদের বোকা বানিয়ে, প্রতারণা করে আমাদের (ঠাকুরগাঁও শহরের) টাউনের লোকজন বিক্রি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন; কিন্তু সাধারণ মানুষগুলো তাদের সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
রোববার উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের পূর্ব চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত নির্বাচনি সভায় দেওয়া বক্তব্যে কামরুল হাসান এসব কথা বলেন। এরপর তিনি জেলা শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও শহরের চৌরাস্ত মোড়ে নির্বাচনি সভার বক্তব্যের ইতি টানেন। এসব সভায় দেওয়া তার বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ঘুরপাক খাচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হাসান খোকন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য।
তিনি বলেন, বিয়ের যৌতুকের মতো চাকরির জন্য ঘুসের টাকার দরদাম হাঁকানো হচ্ছে। যে যত টাকা দিতে পারে তার চাকরি ততটা নিশ্চিত। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির চাকরি জন্য ১৩ লাখ ১৪ লাখ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দর উঠছে। টাকা নাই, চাকরি নাই। বর্তমানে এই হলো অবস্থা।
কামরুল হাসান খোকন তার দলীয় (আওয়ামী লীগের) নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘মাদকের ব্যবসা চলছে জমজমাট ঠাকুরগাঁওয়ে। মাদকের ব্যবসার পেছনে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। হামার (আমাদের) নেতালা ‘এইঠে’ থেকে ভাগ পায়। আইজ হামার জেলা ক্রীড়া সংস্থায় প্রতি বছরে কোটি কোটি টাকা আসছে। দুই-তিন বছর আগে স্টেডিয়ামে প্রতি সপ্তাহে হাউজি খেলা হয়। এটা দিছে খেলার জন্য। তুমাক টাকা দ্যাছে ছুয়ালাক ফুটবল খেলার তানে, তুমাক টাকা দ্যাছে ক্রিকেট খেলিবার তানে। তুমরা এইঠে হাউজি খেলছেন, জুয়া খেলছেন। এই ভাবে হামার নেতালা যারা জেলা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব প্রাপ্ত আছেন তারা এভাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা মেরে দিয়ে অর্থবিত্তের মালিক হচ্ছেন। আর খেলার মাঠগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে।’
ভোটারদের উদ্দেশে কামরুল বলেন, জনপ্রতিনিধিরা হবেন জনগণের সেবক। জনপ্রতিনিধিরা নাগরিকদের কথা ভাববেন। সুখে দুখে মানুষের পাশে থাকবেন। পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াবেন। মানুষের দুঃখদুর্দশার কথা শুনবেন। সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার বলেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান অরুনাংশু দত্ত টিটো (আনারস), সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার (মোটরসাইকেল), সহ-সভাপতি রওশনুল হক তুষার (ঘোড়া) ও কামরুল হাসান খোকন (কাপ-পিরিচ)। এছাড়াও পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।