সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করে স্কুল ছুটি দিয়ে কর্মচারীর বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম আব্দুর ররেব বিরুদ্ধে। 

শনিবার দুপুর ১টার দিকে ওই স্কুলের নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানের বাড়িতে শিক্ষকসহ সবাইকে নিয়ে দাওয়াতে যান প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

সরেজমিন দেখা যায়, স্কুলের প্রধান গেট বন্ধ। ভেতরে নতুন ভবন নির্মাণ কাজের জন্য কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক অবস্থান করছেন। যে সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস হওয়ার কথা সেই সময় স্কুলে নেই কোনো শিক্ষার্থী। প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে শুরু করে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ ছিল তালাবদ্ধ। চারদিকে শুনশান নীরবতা! 

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছে, সকালের কয়েকটা ক্লাস হওয়ার পরেই দুপুর ১টার আগে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী আতাউর রহমান এবার সস্ত্রীক হজে যাবেন। এজন্য শনিবার নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সকালে কয়েকটা ক্লাস নেওয়ার পরেই তড়িঘড়ি করে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক কেএম আব্দুর রবের নির্দেশে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিজেই সব শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিয়ে দাওয়াত খেতে যান। ক্লাস বাদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের এমন স্বেচ্ছাচারিতা এবং ছুটি দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই নানা কারণে বছরের বেশিরভাগ সময় স্কুল ছুটি থাকে। বাচ্চাদের পড়াশোনা ঠিকমতো হয় না। তারপর এভাবে ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ায় বেশ কয়েকটা ক্লাস করতে পারল না শিক্ষার্থীরা। আর হুট করে ছুটি দেওয়ায় অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের নিতে আসতে পারেননি। এতে বিপাকে পড়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী। এটা কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তারা।

চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম আব্দুর রব বলেন, স্কুলের এক স্টাফ হজে যাবে, সেজন্য দাওয়াত খেতে এসেছি। আসলে প্রতিষ্ঠানের কোনো স্টাফের দাওয়াত খেতে এভাবেই যাওয়া হয়। বরাবরই তাই হয়ে আসছে। 

স্কুল বন্ধ করে সবাইকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এই প্রধান শিক্ষক বলেন, আসলে মেয়েরা তো দুষ্টু। স্কুল চালু রাখা ঠিক হবে না। তাই ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে আসা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী বলেন, স্কুল ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালীম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। ফলে আমি কিছু বলতে পারছি না।