Logo
Logo
×

সারাদেশ

বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

Icon

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০১:১৪ এএম

বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন কলেজের সাধারণ শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো আবেদনে বলা হয়েছে, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হবিবর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, আর্থিক দুর্নীতি, চাঁদা দাবি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণসহ অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারি বিধিমোতাবেক একাডেমিক কাউন্সিলে কলেজ পরিচালানার জন্য সভা করে যাবতীয় রেজুলেশন অনুমোদনের মাধ্যমে সব কার্যাবলী পরিচালনার বিধান থাকলেও একাডেমিক কাউন্সিলকে পাশ কাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার পছন্দের কতিপয় শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

একাডেমিক কাউন্সিলের কোনোরূপ সভা না করেই অনিয়ম ও বিধিবহির্ভূতভাবে রেজুলেশন লিখে তাতে শিক্ষকদের নানা কৌশলে স্বাক্ষর নেন এবং পরে ফ্লুইড ব্যবহার ও ঘষামাজা করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। কথায় কথায় তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি খেয়ে ফেলবেন বলে হুমকি দেন। গত বছরের ডিসেম্বরে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বরাদ্দের পর তার পছন্দের কতিপয় জুনিয়র নন-এমপিও শিক্ষকের মাধ্যমে কলেজের প্রায় ৯৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে পাঁচ থেকে ১১ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বাধ্য করেন। তার এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে অন্তত ১০ জন শিক্ষকের বেতন-ভাতা আটকে রেখে তাদের মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।

শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা, বকেয়া বেতন ও শ্রান্তি বিনোদন ভাতাসহ ছুটি মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে তিনি প্রতিবারই তাদের কাছ থেকে ঘুস নেন। অধ্যক্ষের অন্যায়ের প্রতিবাদকারী পূর্বে এমপিওভুক্ত সিনিয়র প্রায় ২৫ জন শিক্ষকের বৈধ পাওনা শ্রান্তি বিনোদন ছুটি মঞ্জুর করতে গড়িমসি ও নানা রকম টালবাহান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে তিনি সরাসরি তার ভাতিজি জামাই ও এক নাতিকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেন।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের জুনিয়র প্রভাষক মো. শহীদুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আপন ভায়রা ভাই হওয়ায় তিনি কতিপয় পছন্দের জুনিয়র শিক্ষককে দিয়ে নানাভাবে সিনিয়র শিক্ষকদের অপমান অপদস্ত করেন। তিনি তার অনুগত ও পছন্দের শিক্ষকদের খুশি রাখতে প্রতিদিন দুপুরে কলেজের অফিসকক্ষে রান্না করে ভূরিভোজের আয়োজন করেন।

কলেজের ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, পরিসংখ্যান ও দর্শন বিষয়ের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব বিধিবহির্ভূতভাবে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের না দিয়ে তিনি তার পছন্দমতো অনুগত জুনিয়র শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রতিবাদ করলে তিনি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তিন হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর এ প্রতিষ্ঠানে কোনো রসিদ না দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে ইচ্ছামতো ব্যয় করেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নেকবর হোসেন বলেন, শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ অধ্যক্ষের বিষয়ে করা সব অভিযোগ শতভাগ সত্য। শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ তার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল করিম বলেন, অধ্যক্ষ তার ভায়রা শহীদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে কলেজের সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। সিনিয়র শিক্ষকদের আÍসম্মান নিয়ে চাকরি করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হবিবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো অসত্য ও অনৈতিক। তিনি কোনো অনিয়ম করেন না। তার সমবয়সি শিক্ষকরা অধ্যক্ষ হতে না পারায় মনোকষ্টে এসব অভিযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, তিনি কাউকে চাকরি নয়, দৈনিক মজুরিভিত্তিতে মাস্টাররোলে নাতি ও ভাতিজি জামাইকে নিয়োগ দিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম