Logo
Logo
×

সারাদেশ

লংগদুতে মাইনী নদী খনন, মাটিতে ভরাট হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদ

Icon

সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০১:০৯ এএম

লংগদুতে মাইনী নদী খনন, মাটিতে ভরাট হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদ

রাঙামাটির লংগদুতে মাইনী নদী খননে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাগড়াছড়ি জেলা। এ নদী খননের মাটিতে ভরাট হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের অংশ। এ নিয়ে বাজার সম্প্রসারণের নামে হ্রদ দখলের অভিযোগও উঠেছে। এতে লংগদুর স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী জড়িত বলে খবর পাওয়া যায়।

জানা গেছে, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা থেকে নামা মাইনী নদী মিলেছে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার কাচালং নদীর সঙ্গে যা মিশে একীভূত হয়ে গেছে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে। এদিকে গভীরতা হারিয়ে বর্তমানে মৃতপ্রায় মাইনী নদী। এ অবস্থায় নদীটির হারানো যৌবন ফেরাতে এর খননের প্রকল্প হাতে নেয় পাউবো, খাগড়াছড়ি। যার বাস্তবায়ন কাজ বর্তমানে চলমান। অন্যদিকে নদীর খননের মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের অংশ।

স্থানীয়রা জানান, মাইনীমুখবাজার বাজার সম্প্রসারণের নামে কাপ্তাই হ্রদের বিস্তীর্ণ অংশ ভরাট করছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী। লংগদু উপজেলার মাইনীমুখ বন বিভাগের বিশ্রামাগারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মাইনী নদীতে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে খননের কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। আর নদী খননের মাটি ও পাইপলাইন দিয়ে মাইনীমুখবাজারের পাশে ভরাট করা হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের বিস্তীর্ণ অংশে।

ফলে যেখানে খনন করে কাপ্তাই হ্রদের নাব্য ফিরিয়ে নৌযান চলাচল ও মৎস্য উন্নয়ন  স্বাভাবিক করা দরকার, সেখানে ভরাট করে বালুচর বানিয়ে সংকুচিত করা হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদকে। বাঁধ দিয়ে নদী খননের মাটি ও বালু ফেলে হ্রদের প্রায় তিন একর জায়গা ভরাট করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয়দের তথ্য মতে, চলতি শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় প্রায় চার মাস ধরে চলছে মাইনী নদীর খননের বালু দিয়ে পরিবেশ বিধ্বংসী কাপ্তাই হ্রদ ভরাটের এ কাজ। এতে হ্রদের অংশ ভরাট হওয়ায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে নৌযান চলাচল ঘাট ও মৎস্য চাষের ক্ষেত্র।

এদিকে নিজের যৌক্তিকতা উপস্থাপন করে মাইনীমুখবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, কলার বাজার, গরুর বাজার, কাঠ বাজার বসার কারণে মাইনীমুখ বাজারের জায়গার সংকুলান কমে গেছে। এজন্য মৌখিকভাবে মাইনীমুখ ইউপি চেয়ারম্যান কমল আমার সঙ্গে সমন্বয় করছেন, যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাটি যদি সেখানে ফেলা হয় সেক্ষেত্রে বাজারটা সম্প্রসারণ করা যাবে।

এ ব্যাপারে লংগদুর মাইনীমুখ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল বলেন, মাইনীমুখ বাজারটি ওই এলাকার মধ্যে একটা বড় বাজার। কিন্তু হাটবাজার বসার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই বাজারটি সম্প্রসারণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড লাল পতাকা দিয়ে লে-আউট দিয়েছে, যাতে করে স্থানীয়রা কাপ্তাই হ্রদের খাস জায়গা ব্যবহার ও চাষাবাদ না করে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) খাগড়াছড়ির উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, প্রকল্পে উল্লেখ আছে ড্রেজিং করা মাটি বা বালু যদি কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও স্কুলের জন্য চাহিদা থাকে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের দান করে দিতে পারব। এক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে ট্রাক কিংবা পরিবহণের খরচ তারা দেবেন। মাইনীমুখ ইউপির চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের চাহিদার ভিত্তিতে তাদের খাল খননের মাটি ও বালু দেওয়া হচ্ছে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত অভিযোগ আসেনি। আমি এ বিষয়ে অবগত নই। লংগদু ইউএনও’র মাধ্যমে সরেজমিন পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম