নির্বাচন অফিসারকে লাঞ্ছিত করায় এক আইনজীবীর নামে মামলা হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি ও নিরাপত্তা চেয়ে জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় মামলাটি করেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে।

বুধবার বিকাল সোয়া ৫টায় শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে নির্বাচন সংক্রান্ত একটি নথি নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াসের রুমে আলোচনা করছিলেন। এ সময় ওই রুমে জিপি আলমগীর মুন্সী প্রবেশ করলে নথিটি উল্টিয়ে রাখেন নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে।

এ ঘটনার একদিন পর বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পূর্ব পাশ দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়ার সময় জিপি আলমগীর মুন্সী নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র ডেকে নথিটি উল্টিয়ে কেন রাখলেন- এমন প্রশ্ন তুলে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে যান। বিকাশ চন্দ্র দে এ ঘটনার প্রতিবাদ না করে রিটার্নিং কর্মকর্তার রুমে চলে যাওয়ার সময় সিঁড়িতেই দেখা হয়ে যায় রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন গিয়াস, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন, এনডিসি সোহেল রানা ও ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ সূত্রধরের সঙ্গে।

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিঁড়িতে পেয়ে নিচে নেমে জিপি আলমগীর মুন্সীর বিষয়টি তাদের বলাতে একটু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জিপি আলমগীর মুন্সী আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে যান। 

এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যদের সামনেই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে নির্বাচন অফিসারকে জিপি আলমগীর মুন্সী লাঞ্ছিত করেন। পরবর্তীতে বিষয়টির বিস্তারিত জেলা নির্বাচনকে অফিসারকে অবগত করেন বিকাশ চন্দ্র দে। জেলা নির্বাচন অফিসার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন। এ ঘটনার বিচার দাবি ও নিরাপত্তা চেয়ে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে। 

ভুক্তভোগী শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে বলেন, বিষয়টি আমি আমার সিনিয়রদের জানিয়েছি। তারা মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

বিষয়টি নিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি সারা বাংলাদেশের অফিসারদের জন্য দুঃখজনক। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন গিয়াস বিষয়টি নিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি সম্পূর্ণ অবগত। যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। এ বিষয়ে আইনগতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পালং মডেল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জিপি আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলমগীর মুন্সী বলেন, যে অভিযোগের কথা বলছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওনার সঙ্গে আমার এমনিতেই কথা হয়েছে। যারা উপস্থিত ছিলেন তারাও জানেন ওনার সঙ্গে আমি কী কথা বলেছি। ওনার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।