প্রতিনিয়ত সাপের কামড়ে আক্রান্ত এবং ২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শরীয়তপুরের চরাঞ্চলগুলোতে চরম সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে রাসেল ভাইপার আতঙ্কে রয়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় ধরা পড়ছে রাসেল ভাইপার, গোখরা, দাঁড়াশসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ; যা মানুষের মনে আতঙ্কের মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপ ধরা পড়ছে সখিপুর থানাধীন চরাঞ্চলগুলোতে।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় এমপি একেএম এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বে একটি জরুরি সভা করা হয়েছে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার, ওসি মাসুদুর রহমান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপজেলা হাসপাতালের বাহিরে বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের এন্টিভেনম (ভ্যাকসিন) প্রদান ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ ভেদরগঞ্জ উপজেলাধীন সখিপুর থানা ক্যাম্পাসে সাপ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পরে বিভিন্ন স্থান থেকে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধির খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২৭ এপ্রিল আনন্দ বাজার এলাকায় এক প্রবাসী যুবক এবং ১২ মে সখিপুর ইউনিয়নের এক ব্যবসায়ীর সাপের কামড়ে করুণ মৃত্যু হয়। সাপের কামড়ে অসুস্থ হয় বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ, এদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন।
তাছাড়া এ উপজেলার পদ্মা নদীবেষ্টিত দ্বীপ ইউনিয়ন কাঁচিকাটায় ধানখেতে, ঘাসখেতে, মাছের খাঁচায় ও বিভিন্ন ফসলি জমিতে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে বিষধর রাসেল ভাইপার। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চেনা অচেনা সাপ।
চট্টগ্রাম ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সহকারী গবেষক ও প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস রোমন বলেন, শরীয়তপুরের মতো পদ্মা নদীবেষ্টিত জেলাগুলোতে রাসেল ভাইপারের মতো বিষধর সাপগুলোর উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলছে। বিষের দিক দিয়ে এ সাপটি পৃথিবীর পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এই সাপের কামড়ে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত। এ ধরনের সাপ কামড়ালে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।
সখিপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে আমাদের এলাকার দুইজন ব্যক্তি সাপের কামড়ে মারা গেছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে সাপের উপদ্রবর খবর আসছে। আমাদের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে যথাসম্ভব সচেতন করে যাচ্ছি।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, এমপি এনামুল হক শামীমের বৈঠকে সখিপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনম রাখা ও চিকিৎসা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সবাইকে বলব, যদি কাউকে সাপে কামড়ায় তাহলে দেরি না করে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে আসবেন। আমাদের কাছে সাপে কাটা রোগীর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন রয়েছে।