গোপালগঞ্জে মহাসড়কে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ, অবরোধ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ১০:২৩ পিএম
গোপালগঞ্জে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় গুলিতে নিহত মো. ওয়াসিকুর রহমান ভূঁইয়ার লাশ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। বুধবার দুপুর ১টায় মহাসড়কের চেচানিয়াকান্দিতে এ বিক্ষোভ করেন তারা।
সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাধারণ মানুষ এতে অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধে মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
এ সময় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সদ্য বিজয়ী চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং টায়ারে আগুন দিয়ে মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরে বেলা ২টায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ সদরের চন্দ্রদীঘলিয়া বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিএম লিয়াকত আলী।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল আলম কাকন, উপপ্রচার সম্পাদক শিমুল চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান বিটু, জেলা যুবলীগের সহসভাপতি শেখ সাহাবুদ্দিন হিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান সুক্তি, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জায়েদ মাহামুদ বাপ্পি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা প্রমুখ।
এর আগে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে ওয়াসিকুরের লাশ নিয়ে শোক মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মহাসড়কে গিয়ে লাশ সামনে রেখে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক বলেন, নির্বাচন-পরবর্তী যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আমরা এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তাই আমরা সাময়িকভাবে অবরোধ তুলে নিয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করছি প্রশাসন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদীঘলিয়া বাজারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. ওয়াসিকুর রহমান ভূঁইয়া (২৭) নামে একজন চায়ের দোকানদার নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও চারজন। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলি আফিফা বলেন, মামলার আগেই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা আন্দোলনকারীদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছি। তারা অবরোধ তুলে নিয়েছে।
জেলা প্রশাসক কাজি মাহবুবুল আলম বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে এবং স্বচ্ছভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান কম ছিল। আমাদের দেশে একটা কালচার আছে, পরাজিত হলে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন তোলা হয়।