Logo
Logo
×

সারাদেশ

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া সেই ফারজিনার পরিবারকে ঘর দেওয়া হচ্ছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, তাহিরপুর

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৮:০০ পিএম

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া সেই ফারজিনার পরিবারকে ঘর দেওয়া হচ্ছে

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া শিশুশিল্পী ফারজিনা আক্তারের পরিবারকে অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। ‘ঘর না পেয়ে এলাকা ছাড়ল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ফারজিনার পরিবার’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরের অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বশীলদের নজরে আসার পর তাদের ঘর দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় জমিসহ একটি নতুন ঘর তৈরির অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার পরও গত ছয় মাস ধরে সুনামগঞ্জ সমাজসেবা অফিস, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক, এমনকি সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে বারবার ধরনা দিয়েও শিশুশিল্পী ফারজিনা আক্তারের বাবা মো. সায়েম কারো কোনো সহযোগিতা কিংবা সাক্ষাতের সুযোগ পাননি।

নিরুপায় হয়ে সোমবার সকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওড় তীরবর্তী ছিলানী তাহিরপুর গ্রাম ছেড়ে পুরো পরিবার নিয়ে সায়েম চলে যান সিলেটের গোলাপগঞ্জে।

এরপর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় শিশুশিল্পী ফারজিনার বাবা সায়েমকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মোবাইল ফোনে ফোন করে দেখা করার জন্য সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে ডেকে আনা হয়।
বেলা আড়াইটার দিকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সায়েম দেখা করেন।

বিকাল সাড়ে ৫টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিশুশিল্পী ফারজিনার পরিবারের ঘর তৈরি না হওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বশীলদের নজরে আসে। এরপর পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কথা শুনে ফারজিনার বাবা সায়েমকে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে ডেকে এনে আবারো নগদ ২৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে তাদের বন্দোবস্ত দেওয়া ১৭ শতক জমিতে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকায় নতুন ঘর তৈরির কাজ শুরু করা হবে।

প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওড় তীরের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের বাসিন্দা সায়েমের ৯ বছরের শিশুকন্যা ফারজিনা আক্তার ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া  ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ সিনেমায় অভিনয় করে শিশুশিল্পী শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ফারজিনা পুরস্কার গ্রহণ করে।

সেই সময় সুনামগঞ্জের তৎকালীন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী পরিবারের আর্থিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে ফারজিনার লেখাপড়ার জন্য ২০ হাজার টাকা দেন। অভাবের তাড়নায় এক সময় বসত বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ায় মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন সাবেক জেলা প্রশাসক।

ফারজিনার বাবা সায়েম এরপর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘরের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর মাধ্যমে ফারজিনার পরিবারকে একটি জায়গাসহ ঘর দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সময়ে ফারজিনার বাবা ও মায়ের নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় ১০ লাখ টাকার একটি পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ছড়া মৌজায় লাকমা গ্রামে ফারজিনার পরিবারকে ১৭ শতক জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। ওই জমিতে একটি ঘর করে দেওয়ার জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ের অনুকূলে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়; কিন্তু সমাজসেবা কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ঘর তৈরির ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয়নি। সাত মাস পার হয়ে গেলেও ঘর আর হয়নি। ফলে জমিটিও বেদখল অবস্থায় আছে।

এজন্য উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেছেন সায়েম। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে কোনো সহযোগিতা পাননি তিনি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম