সুন্দরবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার, তদন্ত কমিটি গঠন
শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
পূর্ব সুন্দরবনের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি এলাকার বনে আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার। রোববার দুপুর ১২টার দিকে কাছাকাছি শেলা নদী থেকে পানি এনে অগ্নিকাণ্ডের স্থানে পানি বর্ষণ করে হেলিকপ্টারটি।
এরই মধ্যে আনুমানিক ১০ একর জায়গাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর পূর্বে আগুনের বিস্তৃতি রোধে ঘটনাস্থলের চারপাশে ফায়ার লাইন কাটা হয়। ত্বড়িত পদক্ষেপে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে বনবিভাগ।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন, পুলিশ সুপার মো. আবুল হাসনাত খান, মোরেলগঞ্জের ইউএনও এসএস তারেক সুলতান, বন সংরক্ষক (খুলনা অঞ্চল) মিহির কুমার দে, ডিএফও (পূর্ব বিভাগ) কাজী মো. নূরুল করিমসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন।
জানা যায়, শনিবার সকালে চাঁদপাই রেঞ্জের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি এলাকার লতিফের ছিলা এলাকার বনে আগুন জ্বলতে শুরু করে। রোববার ভোরে বাগেরহাট, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, কচুয়া ও মোংলা ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে যোগ দেয় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর পৃথক দুটি টিম। এছাড়াও সঙ্গে রয়েছে বনবিভাগের কর্মী, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, ভিটিআরটি, টাইগার টিম, ও এলাকাবাসী। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যোগ দেয় হেলিকপ্টার।
ঘটনাস্থলে থাকা সংবাদকর্মী নাজমুল হোসেন মোবাইল ফোনে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, মধু আহরণকারীদের মশাল কিংবা জেলেদের ফেলে দেওয়া সিগারেট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির খান জানান, সুন্দরবনে আরও দুই-তিন দিন পূর্বে আগুন লেগেছে; যা বাহির থেকে দেখা সম্ভব হয়নি। লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটার গভীরে আগুনের সূত্রপাত। তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত মো. হাফিজুর রহমান বলেন, কমপক্ষে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আগুনের বিস্তার লাভ করেছে। অন্তত ৫০ জায়গায় এ আগুন ছড়িয়ে পরেছে। যতই চেষ্টা করা হোক না কেন আরও দুই তিন দিন সময় লাগবে এ আগুন নেভাতে। এক জায়গার আগুন নেভানোর কিছু সময় পর সেখানে আবারো আগুন জ্বলে উঠছে। বনের মধ্যে প্রায় এক ফুট স্তর শুকনো পাতা পড়ে আছে।
ডিএফও কাজী মো. নূরুল করিম জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার সকালের দিকে ঘটনাস্থলের চারিদিকে ঘুরে যায়। পরে দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে তারা পানি দেওয়া শুরু করে। শেলা নদী থেকে পানি তুলে নিয়ে পানি ছিটাচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরত্বে ভোলা নদীতে পাইপ সেট করে ফায়ার সার্ভিস পানি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করছে। সবার প্রচেষ্টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।