সাটুরিয়ায় লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৯ পিএম
সাটুরিয়ায় তীব্র গরমের সঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে এমনিতেই হাঁসফাঁস অবস্থা জনজীবনে। এর সঙ্গে দিনে রাতে লোডশেডিং, দুর্ভোগে নতুন উপকরণ যোগ করেছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি উপজেলার ছোট-বড় কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সেচের অভাবে ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হওয়া ও মানুষের কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং শুরু হওয়ায় সবার বিশেষ করে প্রবীণ ও শিশুদের কষ্ট দুর্ভোগ চরমে। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মনিরুজ্জামান জানান তীব্র দাবদাহের কারণে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে রোগীদের অনেক কষ্ট হচ্ছে, জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকলেও পর্যাপ্ত তেলের বরাদ্দ না থাকায় তা ব্যবহার করতে পারছি না এতে করে রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে গত কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। এরপরও আবার ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং। এতে দিন দিন ফুঁসে উঠছে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। রাতের বেলা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না। শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না। উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা, ব্যাংকিং সেবা, শিক্ষা ও গৃহস্থালির কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎনির্ভর ব্যবসা বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। বিদ্যুতের অভাবে উপজেলার কৃষকরা ঠিক মতো জমিতে সেচ দিতে পারছে না। উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের। তীব্র তাপপ্রবাহে পানির অভাবে বোরো ধানের খেতের মাটি শুকিয়ে সাটুরিয়ার কুষ্টিয়া এলাকায় ভুট্টা খেতে কাজ করা কয়েকজন কৃষি শ্রমিক জানায়, ভুট্টা পরিপক্ব হয়ে পরায় তা গাছ থেকে তুলে দিতে হচ্ছে। গরমে জমিতে বেশিক্ষণ কাজ করা যায় না। তারা কিছুক্ষণ কাজ করে আবার জমির পাশে গাছের নিচে বসে থাকে। এভাবেই বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তীব্র দাবদাহের কারণে কৃষি শ্রমিকের সংকটও দেখা দিয়েছে। বালিয়াটির কৃষক লোকমান হোসেন বলেন, জমিতে এখন বোরো ধান রয়েছে। এ সময় ধানে সেচ দেওয়া খুবই দরকারি। তা না হলে ধান চিটা হবে। বিদ্যুতের সমস্যার কারণে দিনে রাতে সব সময় সেচ পাম্পের কাছে বসে থাকতে হচ্ছে। যখন বিদ্যুৎ আসছে তখনই সেচ দিচ্ছি।
সাটুরিয়া কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে ফসলের মাঠে প্রধান ফসল বোরো ধান। এ সময় ধানে সেচ দেওয়া খুবই প্রয়োজন। লোডশেডিংয়ের কারণে সেচে সমস্যা হচ্ছে। ঠিক মতো সেচ না দিতে পারলে ধানে চিটা হয়ে ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সাটুরিয়া পল্লী বিদ্যুতের উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুন অর রশীদ বলেন, সাটুরিয়াতে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১২ থেকে ১৩ মেগাওয়াট সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৫ থেকে ৬ মেগাওয়াট। চাহিদার অর্ধেক বরাদ্দ পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে।