ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনি সহিংসতা, পুলিশের গুলিতে নিহত ১
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৪ এএম
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ১নং আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফল ঘোষণা কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ছোড়া গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিরল উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি উপজেলার সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মাবুদ বক্সের ছেলে মোহাম্মদ আলী কাচুয়া (৬৫)। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী টিউবওয়েল প্রতীকের মেম্বারপ্রার্থী জোবায়দুর রহমানের চাচা।
জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তসাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, আজিমপুর ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণনা শেষ হয়। এ সময় ইউপি সদস্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জোবায়দুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ উত্তেজনা থামাতে চেষ্টা করেন। পরবর্তীকালে উত্তেজিত জনতা ভোটকেন্দ্রে ও পুলিশের ওপরে চড়াও হন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পুলিশ এ সময় প্রথমে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হন। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোহাম্মদ আলী।
স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জিল্লুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরের পিঠের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছিল। চেয়ারম্যানপ্রার্থীরা তাদের ফলে সন্তুষ্টও হয়েছেন। কিন্তু দুই সদস্য প্রার্থী ফল মেনে না নেওয়ায় সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে উত্তেজিত সমর্থকরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এ সময় কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ফিরে আশ্রয় নিলে সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রেও হামলা চালান। পুলিশ তখন আত্মরক্ষার্থে ৬০ থেকে ৭০টি গুলি ছোড়ে। এ সময় ওই বৃদ্ধের শরীরে গুলি লাগে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। পুলিশের কয়েক সদস্যও আহত হয়েছেন।
বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ, বিরল ও আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ছিল রোববার। সকাল ৮টায় ব্যালটে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কোনো প্রকার সহিংসতার ঘটনা ছাড়াই বিকাল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। চেয়ারম্যান পদে আজিমপুরে লিটন আলী, ফরক্কাবাদে হুসেন আলী ও বিরলে মারুফ হাসান নির্বাচিত হন।