হোমনায় চড়া সুদে এনজিওর ঋণ গৃহবধূর কারাদণ্ড
হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১ পিএম
হোমনায় এনজিওর চেক জালিয়াতির মামলায় খোশনেয়ারা বেগম নামের এক গৃহবধূর ৮ মাসের জেল হয়েছে। কুমিল্লা অর্থ ঋণ আদালত ২৮ মার্চ পৃথক মামলায় ২ ও ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেন। খোশনেয়ারা মঙ্গলকান্দি গ্রামের জসিম উদ্দিনের স্ত্রী। বর্তমানে স্বামী-সন্তান ফেলে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে গাভি পালন প্রকল্পের জন্য গৃহবধূ খোশনেয়ারাকে উদ্দিপন মানবিক উন্নয়ন সংস্থা ২ লাখ, ঠেঙ্গামারা মহিলা সমবায় সমিতি (টিএমএসএস) এক লাখ ৫০ হাজার, সাজেদা ফাউন্ডেশন ২ লাখ, ব্যুরো বাংলাদেশ ১ লাখ ৫০ হাজার এবং আশা এনজিও এক লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করেন। সেই সময় গৃহবধূর কাছ থেকে ব্যাংকের ফাঁকা চেক রাখা হয়। নিয়মিত মাসিক কিস্তি পরিশোধ করলেও করোনা মহামারি দেখা দিলে কিস্তি পরিশোধে অনিয়ম শুরু হয়। পরে ব্যাংকের ফাঁকা চেক ডিজঅনার দেখিয়ে ২০২১ সালে ঋণগৃহীতা গৃহবধূর বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা হয়। হোমনা প্রেস ক্লাবে ২৮ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে খোশনেয়ারার স্বামী জসিম উদ্দিন বলেন, যাচাই-বাছাই ছাড়াই কয়েকটি এনজিও আমার স্ত্রীকে ঋণ দেয়। পরে করোনার কারণে ব্যবসা মন্দা হলে কিস্তি দিতে না পারায় তার নামে মামলা হয়। সাজেদা ফাউন্ডেশনের এক সহকারী ঋণ প্রদান কর্মকর্তা জানান, ঋণের পুরো টাকা পরিশোধ না করায় সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে আদালতে মামলা হয়েছিল।
দণ্ডপ্রাপ্ত খোশনেয়ারা বেগম জানান, করোনার কারণে ঠিকমতো কিস্তি দিতে পারিনি। আসল টাকা কিস্তিতে দিয়ে মিটমাট করছিলাম। কিন্তু সুদের টাকা জন্য মামলা উঠায়নি। আমার দ্বারা এখন টাকা পরিশোধ করা সম্ভব না। আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোনো পথ নেই। হোমনা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌস আবদুল্লাহ বলেন, এনজিওগুলো নারীদের স্বাবলম্বী করার কথা বলে হয়রানি করছে। কাগজে-কলমে ১০ শতাংশ সুদের কথা বললেও কৌশলে ফাঁদে ফেলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে। এতে দরিদ্র মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার পরিবর্তে আরও দরিদ্র হচ্ছে।