সাজেকে দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ঈশ্বরগঞ্জের ৫ জনের বাড়িতে মাতম
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৯ পিএম
রাঙ্গামাটির সাজেকের উদয়পুর নব্বই ডিগ্রি এলাকায় ট্রাক উল্টে নিহত হন ৯ জন। তাদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। তাদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়- পরিবার ও স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে। নিহতদের মা-বাবা তাদের সন্তানদের জন্য বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। স্বজনদের কান্নার রোলে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জানা যায়, বুধবার বিকালে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার উদয়পুর সীমান্ত এলাকায় নব্বই ডিগ্রি নামক স্থানে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ৯ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি উপজেলার বড়হিত ও তারুন্দিয়া ইউনিয়নে।
তারা হলেন- তারুন্দিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুর জিথর গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র মোহন মিয়া (২০), চাঁন মিয়ার পুত্র তোফাজ্জল হোসেন বাবু (২১), হেলাল উদ্দিনের পুত্র নয়ন মিয়া (২২), গিরিধরপুর গ্রামের শহিদুল্লাহর পুত্র আবু সাঈদ (২৮) এবং বড়হিত ইউনিয়নের মধ্যপালা গ্রামের রেছত আলীর পুত্র এরশাদুল হক (৩০)।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাঙামাটি সীমান্ত সড়ক পাইলিং কাজের জন্য শ্রমিক হিসেবে সাব-ঠিকাদার মোবারক হোসেন বাবলুর মাধ্যমে তারা রাঙামাটি সীমান্ত সড়কের পাইলিং কাজ করতে যান। বাবলু মিয়া তারুন্দিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুরজিথর গ্রামের মকবুল হোসেনের পুত্র। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন গাড়িচালক তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গাবরবোয়ালী গ্রামের হাসেম ফকিরের পুত্র লালন মিয়া (২৮) ও সাব-ঠিকাদার মোবারক হোসেন বাবলু।
নিহত তোফাজ্জল হোসেন বাবুর মা জুবেদা খাতুন বলেন, আমার জমা-জমি নাই, একটা মাত্র ঘরই সম্বল। টেহা দেয় না কাম কইরা তইছে, কামে না গেলে এই টেহাও দিতো না। পুত্রের হাতে ঘা বানাইছে কাম কইরা। তবুও বাবলু টেহা দেয় না।
নিহত মোহনের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, আমার পুত বাবলুর কাছে ঈদের আগের কামেরই টেহা পাইবো- অহন যদি কামে না যায় তাইলে বাবলু টেহা দিতো না। এর লাইগ্যা আমার পুত আমারে না কইয়াই কামে গেছে গা।
নয়ন মিয়ার স্ত্রী তানজিলা জানান, ঠিকাদার বাবলু টাকা-পয়সা দেয় নাই। পূর্বের কাজেরই প্রায় ৪০ হাজার টাকা বাকি থাকায় বাধ্য হয়ে কাজে গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের লাশ তাদের বাড়িতে পৌঁছেনি।
এ ব্যাপারে ইউএনও আরিফুল ইসলাম প্রিন্সের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি সত্যিই হৃদয়বিদারক। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের দাফন কাফনের জন্য প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করা হচ্ছে।