আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তার মা শাহেদা মোশাররফ। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের জন্য মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে দায়ী করেন।
ওই সময় মামলার আসামি বাবুলও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যে শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল কক্সবাজারে বদলি হওয়ার পর সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে উঠে। পাশের রুমে ওই নারীও উঠেছিল। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে। তার পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি মিতু আমাদের জানিয়েছিল। এসব কিছু আমাদের বলায় বাবুল মিতুর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এরপর মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
শাহেদা আদালতকে জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার তার মেয়ে মিতুকে খুন করিয়েছে। পরবর্তীতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেই মিতু হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করে।
শাহেদার সাক্ষ্য শেষে তাকে জেরা করেন আসামি বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী। তিনি যুগান্তরকে বলেন, সাক্ষী শাহেদা মোশাররফ আদালতে বলেছেন- বাবুল আক্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত গায়ত্রী নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন। এ কারণে নাকি বাবুল কিলার ভাড়া করে মিতুকে খুন করিয়েছেন। বিয়ের পর থেকে বাবুলের সঙ্গে তার মেয়ে মিতুর সম্পর্ক ভালো ছিল না বলেও আদালতে উল্লেখ করেন শাহেদা।
কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আদালতে শাহেদা এখন এসব কথা বললেও মিতু খুন হওয়ার পর কখনো কারো কাছে বলেননি যে বাবুলের সঙ্গে তার মেয়ের সম্পর্ক ভালো ছিল না। এমনকি মিতু খুন হওয়ার পর ছয় মাস বাবুল তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। ওই সময়ও তিনি বাবুলকে দায়ী করেননি। বরং পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে বাবুলের সুনাম করেছিলেন। আমরা জেরা করার সময় এসব বিষয় আদালতে উল্লেখ করেছি। জেরা এখনো শেষ হয়নি। বুধবারও তাকে জেরা করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার কাছেই গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পিবিআই মামলার তদন্তে নেমে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে মামলার প্রধান আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়।