Logo
Logo
×

সারাদেশ

পুঠিয়ায় অবৈধ ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকের ছড়াছড়ি

Icon

কেএম রেজা, পুঠিয়া (রাজশাহী)

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১ পিএম

পুঠিয়ায় অবৈধ ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকের ছড়াছড়ি

দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা সব ধরনের অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজশাহীর পুঠিয়ায় অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিকের ছড়াছড়ি। এখানে সরকারি নিয়ম অমান্য করে ব্যাঙের ছাতার মতো অর্ধশতাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার গজিয়ে উঠেছে। এদের বেশিরভাগে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত অভিজ্ঞ কোনো টেকনোলজিস্ট নেই। ডায়াগনস্টিকগুলো থেকে ভুয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

জানা গেছে, পুঠিয়ায় ৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালটিকে কেন্দ্র করে উপজেলায় এসব ডায়াগনস্টিক (প্যাথলজি) গড়ে উঠেছে। হাসপাতাল এলাকা ছাড়া বানেশ্বর বাজারসহ একাধিক এলাকায় হুট করে রাতারাতি ডায়াগনস্টিক গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সদরের কয়েকটি ডায়াগনস্টিকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার লাইসেন্স আছে বলে তারা দাবি করছে। কিন্তু বেশিভাগ ডায়াগনস্টিককে দুই/একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার লাইসেন্স নিয়ে সব রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। উপজেলায় ১৩টি বেসরকারি ক্লিনিক রয়েছে। এদিকে ক্লিনিকগুলোতে মাঝে মধ্যে রোগী মারা যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু রোগী মারা যাওয়ার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের তৎক্ষণিক সমঝোতা করে নেয়। প্রতিটি ক্লিনিকের আবার আলাদা ডায়াগনস্টিকের শাখা খোলা রয়েছে। ডায়াগনস্টিকগুলোতে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত কোনো টেকনোলজিস্ট দেখা যায় না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে পাশকৃতদের টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুঠিয়া সরকারি হাসপাতালে রোগী আসলে প্রথমেই অনেকগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কারণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডায়াগনস্টিক হতে কমিশনের টাকা পেয়ে যাবেন। ডায়াগনস্টিকের আয়া বা পুরুষ দালালরা হাসপাতাল খোলা থাকলে, রোগীদের টানাহেচড়া করে ডায়াগনস্টিকে আনতে দেখা যায়। অভিযোগ উঠেছে, সিভিল সার্জন অফিস থেকে অভিযানে আসার আগেই ডায়াগনস্টিকগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তখন ডায়াগনস্টিকগুলো বন্ধ করে রাখে। পুঠিয়ার কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা রিপোর্ট, রাজশাহীর চিকিৎসকের নিকট নিয়ে গেলে, সেগুলো বাতিল করে পুনরায় নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বলা হয়। 

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক মালিক বলছেন, শুধু জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সঙ্গে সমঝোতা করে তারা অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিকগুলো চালাচ্ছেন। উপজেলাজুড়ে যত্রতত্র গড়ে ওঠার ডায়াগনস্টিকগুলো থেকে ভুয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুঠিয়া দুর্গাপুর চারঘাট তিন উপজেলার ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি আ. রহমান বলেন, উপজেলায় ১৩টি ক্লিনিক, ১৮টি বৈধ ডায়াগনস্টিক রয়েছে। বাকি ডায়াগনস্টিকগুলোর সঙ্গে আমাদের সমিতির কোনো সঙ্গে সম্পর্ক নেই। কিভাবে অবৈধভাবে এগুলো চালাচ্ছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে এদের কারণে আমরা যারা বৈধ ব্যবসা করছি তাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে  রাজশাহী  সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক যুগান্তরকে বলেন, অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক আছে কিনা তা বলতে পারব না। তবে নতুন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রীর নির্দেশের আলোকে অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তারপর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম