Logo
Logo
×

সারাদেশ

সিংগাইরে পাড়া-মহল্লায় সাড়া ফেলেছে ‘মাংস সমিতি’

Icon

মুহ. মিজানুর রহমান বাদল, সিংগাইর

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫১ পিএম

সিংগাইরে পাড়া-মহল্লায় সাড়া ফেলেছে ‘মাংস সমিতি’

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে নিু ও নিু মধ্যবিত্ত মানুষের ব্যতিক্রমী মাংস সমিতি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের একটি-দুটি করে সমিতি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এ উদ্যোগ। প্রথমদিকে এ সমিতির কথা শুনে অনেকেই অবাক হলেও বর্তমানে লোকজন এ সমিতি থেকে উপকৃত হওয়ায় পাড়া-মহল্লায় এর প্রচলন ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এ ধরনের মাংসের সমিতি গঠন করা হয়। সমিতিতে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বাড়ছে মাংস সমিতির সংখ্যা। প্রতিটি মাংস সমিতির সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রতিজন সদস্য মাসে মাসে সমিতিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ৫শ থেকে ১ হাজার অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদুল ফিতরের ঈদের আগে জমাকৃত অর্থ একত্র করে পশু কেনা হয়। ঈদের দিন বা তার দু-একদিন আগেই এই পশু জবাই করে সমিতির প্রত্যেক সদস্যকে ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে ঈদ উদ্যাপনের ক্ষেত্রে নিু ও মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর আর্থিক চাপ যেমন কমে, তেমনি ঈদের আগে সবাই বাড়তি আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। স্থানীয়দের ভাষায় এই সমিতির নাম ‘গোশত বা মাংস সমিতি’। অনেকের কাছে ‘গরু সমিতি’ নামেও পরিচিত।

মধ্যচারিগ্রাম সমিতির উদ্যোক্তা আরিফ হোসেন জানান, সমিতিতে এবার ২১ জন সদস্য। প্রতি মাসে সদস্য প্রতি ৫শ টাকা করে ১০ মাসে ৫ হাজার টাকা জমা রেখেন। সেই টাকা দিয়ে এ বছর কেনা গরু ২৫ রমজান জাবাই করে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। তুলনামূলক বাজার দরের চেয়ে কম দামে এবং একসঙ্গে বেশি পরিমাণ গোশত পেয়ে প্রত্যেকেই খুব খুশি।

ধল্লা ইউনিয়ন ছাড়াও জয়মন্টপ, জামির্ত্তা, চান্দহর, বায়রা, তালেবপুর, শায়েস্তা, চারিগ্রাম, জামশা ও সিংগাইর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের আরও অনেক সমিতি গড়ে উঠেছে। ২৭ রমজান থেকে শুরু হয় সমিতির পশু জবাইয়ের কাজ। চলে ঈদের দিন পর্যন্ত।

ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এলাকায় গোশত সমিতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সমিতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গরুর মাংসের উচ্চমূল্য থাকলেও সমিতির কারণে ঈদুল ফিতরে এখন ঘরে ঘরে গরুর গোশত রান্না হয়। এ ধরনের সমিতির কারণে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ আরও জোরদার হয়।

উপজেলা পরিষদ (অস্থায়ী) চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার বলেন, সারা বছর একটু একটু সঞ্চয় ঈদের দিনে তাদের বেশ বাড়তি আনন্দ দেয়। গোশত ভাগবাঁটোয়ারা করা, গোশত রান্না করার মধ্যেও এক ধরনের আনন্দ পাওয়া যায়। বিশেষ করে এ ধরনের কাজে নারীদের অংশগ্রহণ সমিতিকে আরও মর্যাদাপূর্ণ করে তুলেছে।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু বলেন, সব শ্রেণির লোকজনের অংশগ্রহণে এ ধরনের গোশত সমিতি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেসঙ্গে সবার মধ্যে ঈদের আনন্দটাও অনেক বাড়িয়ে দেয়। এটা খুবই ইতিবাচক উদ্যোগ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম